করোনার সংক্রমণের সাথে মোকাবিলার জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নীতিমালা ও আইন তৈরি করা হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, এলএ কাউন্টিতে নতুন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে এলএ কাউন্টিতে অবস্থিত জিম, রেস্টুরেন্ট, সুপারমার্কেটসহ বিভিন্ন ইনডোর পাবলিক স্পেসে প্রবেশের পূর্বে টিকাগ্রহণের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।
লস এঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিল একটি নতুন নীতিমালা তৈরি করার জন্য সিটি অ্যাটর্নিকে নির্দেশ দিয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ইনডোর পাবলিক স্পেসে প্রবেশের পূর্বে সবাইকে কমপক্ষে টিকার এক ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
নতুন নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাবটি কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট নুরি মার্টিনেজ ও কাউন্সিলম্যান মিচ ওফেরেল উত্থাপন করেন। নীতিমালাটির অধীনে রেস্টুরেন্ট, বার, জিম, রিটেল স্টোর, স্পা, ফিটনেস সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশের পূর্বে টিকা গ্রহণের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।
এখনো জানা যায়নি পরিপূর্ণ নীতিমালাটি দেখতে কেমন হবে বা কিভাবে সেটি বাস্তবায়িত করা হবে।
এলএ সিটির অ্যাটর্নি এখন একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে উপস্থাপন করবেন। খসড়া নীতিমালাটি অনুমোদনের জন্য সিটি কাউন্সিলের কাছে যাবে।
মার্টিনেজ বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব জনগণকে সুরক্ষিত রাখা। যারা টিকা গ্রহণ করেননি তাদের সুরক্ষার দায়িত্বও আমাদের উপর। টিকা গ্রহণ না করার মতো সিদ্ধান্ত সমাজে প্রভাব ফেলে। আমাদের অনেকেরই সন্তান আছে যারা টিকা নেওয়ার যোগ্য না। কারো টিকা গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত তাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলবে।‘
সিটি কাউন্সিলে বৈঠকে অনেক সাধারণ মানুষ ফোন দিয়ে উক্ত নীতিমালার বিরোধিতা করেন।
কাউন্সিলম্যান মিচ ওফেরেল ব্যাখ্যা করেন যে এটি দ্বারা টিকা গ্রহণ করাকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না।
ওফেরেল বলেন, ‘ আমরা কাউকে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে জোর করবো না। আমরা কাউকে টিকাগ্রহন করার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ ক্রয় করতে বাঁধা দেবো না। ওটা অবৈধ আর অনৈতিক হবে। তবে, টিকা না নেওয়ার সিদ্ধান্তটিও অনৈতিক। আমাদের উচিত বিজ্ঞানের সাথে লোড়াই না করে ভাইরাসটির সাথে লড়াই করা।‘ .
নীতিমালাটি তৈরি করার জন্য, সিটি অফিসিয়ালদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য নিতে হবে। তথ্য যাচাই-বাছাইকরণের পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন কোন প্রতিষ্ঠানটি নীতিমালাটির আওতাধীন হবে। এর পাশাপাশি যেসকল বাচ্চারা টিকার জন্য এখনো যোগ্য না, তাদের সুরক্ষার কথাও ভাবতে হবে।
ইতোমধ্যে এলএ কাউন্টির অনেক রেস্টুরেন্ট ও বারে প্রবেশ করার পূর্বে টিকাগ্রহনের প্রমাণপত্র দেখাতে হচ্ছে। টিকা গ্রহণ করে না থাকলে তাদেরকে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ ফলাফলের প্রমাণপত্র দেখতে হবে।
সুরক্ষা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট মালিক ও বার মালিক নিজেরাই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। মূলত, পুনরায় লকডাউন দেওয়ার মতো অবস্থা যেন না হয় সেজন্য তাঁরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাঁরা জানেন, কতিপয় মানুষের টিকা না নেওয়ার মতো সিদ্ধান্তে কারণে তাঁরা পুনরায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে চান না।
বিগত কয়েকমাস ধরেই এলএ কাউন্টিতে পুনরায় করোনা বাড়ছে। করোনার হার হ্রাস করতে কাউন্টির জনস্বাস্থ্য বিভাগ বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহারের আইন প্রণয়ন করেছে।
কাউন্সিলম্যান পল কোরেটজ বলেন, ‘বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করলেই করোনা নির্মূল হবে না। টিকার সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করে নিজের পাশাপাশি নিজের পরিবার ও প্রিয়জনদের সুরক্ষিত রাখতে হবে।‘
ইতোমধ্যে এলএ কাউন্টির শতকরা ৬২ ভাগ মানুষ টিকার সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন।
দেশজুড়েই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, যারা গুরুতরভাবে অসুস্থ হচ্ছেন তাদের সিংহভাগই টিকা নেয়নি।
এলএ কাউন্টির জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, শতকরা ০.০০৯ ভাগ মানুষ টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়ার পরেও করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এলএবাংলাটাইমস/এমডব্লিউ