ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬০,০০০ কর্মী বুধবার থেকে বহুদিনব্যাপী ধর্মঘটে নেমেছেন। তাদের দাবি—ন্যায্য মজুরি, কর্মী সংকট নিরসন ও কাজের পরিবেশের উন্নয়ন।
এই ধর্মঘটের নেতৃত্ব দিচ্ছে দুটি শ্রমিক সংগঠন। আমেরিকান ফেডারেশন অব স্টেট, কাউন্টি অ্যান্ড মিউনিসিপ্যাল এমপ্লয়িজ লোকাল ৩২৯৯ (AFSCME) এর অধীনে থাকা প্রায় ৩৭,০০০ জন ইউসি পরিষেবা ও রোগী সেবা কর্মী দুই দিনের ধর্মঘট পালন করছেন। অন্যদিকে, ইউনিভার্সিটি প্রফেশনাল অ্যান্ড টেকনিক্যাল এমপ্লয়িজ-CWA লোকাল ৯১১৯ (UPTE-CWA) এর আওতায় থাকা প্রায় ২০,০০০ স্বাস্থ্যসেবা, গবেষণা ও প্রযুক্তিগত কর্মী তিন দিনের ধর্মঘট করছেন।
এই দুই সংগঠনের একযোগে ধর্মঘটের ফলে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ন্যায্য চুক্তির দাবি
AFSCME-এর সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি ২০২৪ সালে শেষ হয়, এবং গত এক বছর ধরে নতুন চুক্তির জন্য আলোচনা চলছে। UPTE-CWA-এর চুক্তি ২০২৪ সালের অক্টোবরের শেষে শেষ হয়েছে এবং আট মাস ধরে আলোচনা চললেও সমাধান আসেনি।
ধর্মঘটকারী কর্মী জেসি হার্নান্দেজ বলেন, "আমরা কেবল ন্যায্য চুক্তি চাই—এর বেশি কিছু নয়, কমও নয়।"
কর্মীরা বলছেন, বেঁচে থাকার জন্য ন্যায্য মজুরি এবং কর্মী সংকট নিরসন না হলে স্বাস্থ্যসেবা ও গবেষণা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়বে।
UC-র বিরুদ্ধে 'অন্যায্য আচরণের' অভিযোগ
AFSCME প্রতিনিধিরা বলছেন, গত চার বছরে ১৩,০০০ এরও বেশি কর্মী বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেছেন, কারণ প্রকৃত মজুরি কমে যাচ্ছে, আর জীবনযাত্রার ব্যয় দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
AFSCME লোকাল ৩২৯৯-এর সভাপতি মাইকেল অ্যাভান্ট বলেন, "কর্মীদের প্রকৃত মজুরি কমার ফলে UC মেডিক্যাল সেন্টার ও ক্যাম্পাসগুলোতে কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে, কিন্তু UC প্রশাসন এই বাস্তবতা স্বীকার না করে আমাদের দমন করতে চায়। তারা বেআইনিভাবে নিয়ম তৈরি করে আমাদের প্রতিবাদ দমন করার চেষ্টা করছে।"
UC-র পাল্টা বক্তব্য
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব দিলেও শ্রমিক সংগঠনগুলো তাতে সাড়া দেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, "আমরা কর্মীদের ২০২৫ সালে ৫% বেতন বৃদ্ধি এবং পরবর্তী দুই বছরে ৩% করে বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছি। এছাড়া, নিম্নবেতনভোগী কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি ১ জুলাই থেকে ঘণ্টায় $২৫ নির্ধারণ করার প্রস্তাবও দিয়েছি।"
তবে AFSCME এবং UPTE এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা না করে ধর্মঘটের পথ বেছে নিয়েছে বলে UC কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় আরও জানিয়েছে, "আমরা সর্বদা গঠনমূলক আলোচনায় আগ্রহী, কিন্তু AFSCME ও UPTE যদি আলোচনায় বসতে না চায়, তাহলে চুক্তির সমাধান সম্ভব নয়। ধর্মঘটের কারণে শিক্ষার্থী, রোগী ও কর্মীদের ওপর যাতে কম প্রভাব পড়ে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।"
এলএবাংলাটাইমস/ওএম