নিউইয়র্ক

নিউইয়র্কে ব্রিজ টিভি মালিকের আজীবন জেল

টিভি স্টেশনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী আছিয়া জুবায়ের হাসান (৪৬)-কে গলা কেটে হত্যা করার মামলায় নিউইয়র্কভিত্তিক ইসলামিক টিভি ‘ব্রিজ’র মালিক সৈয়দ মোজাম্মেল হাসান (৫০)কে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে তার দুই সন্তানের সাথে সাক্ষাতের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের বাফেলোতে অবস্থিত এরিক কাউন্টি কোর্টের জজ থমাস ফ্র্যাঞ্চিজ এ রায় ঘোষণা করেছেন। বাফেলোর সহকারী ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি পোল বনেণ্যো এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘বর্বরোচিত আচরণের জন্যে মাননীয় আদালত তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করায় আমরা সন্তুষ্ট।’ এটর্নি পোল বলেন, ‘স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদানের ৬ দিন পর আছিয়া হাছানকে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি ৪০ বার আঘাতের পর গলা কেটে হত্যা করার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের জঘন্যতম একটি অপকর্ম ছিল। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।’
স্ত্রীকে হত্যার পরই নিকটস্থ পুুলিশ স্টেশনে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম। আছিয়া ছিলেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ৮ বছর আগে তাকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের ৪ এবং ৬ বছর বয়েসী দুটি সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর রয়েছে আরেকটি পুত্র সন্তান যার বয়স এখন ১৭ বছর।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জুরি বোর্ড দোষী সাব্যস্ত করে মোজাম্মেল হাসানকে। আত্মপক্ষ সমর্থনকালে সৈয়দ মোজাম্মেল বলেন যে, স্ত্রীর চালচলন এবং রূঢ় আচরণে অতিষ্ঠ হয়েই এমন বর্বরতায় বাধ্য হন তিনি। টিভি স্টেশনে কাজের সময়েও বদমেজাজ প্রদর্শন করেন লোকজনের সামনে-এ কথাও বলেন জুরিবোর্ডের কাছে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম-আমেরিকানদের ঢালাওভাবে ‘মন্দ মানুষ’ হিসেবে চিহ্নিত করার একটি প্রয়াস শুরু হলে সৈয়দ মোয়াজ্জেম ব্রিজ টিভি চালু করেন ২০০৪ সালে। এটি ছিল ইংরেজিতে আমেরিকায় প্রথম একটি ইসলামিক টিভি। এর প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা ছিলেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম এবং তার স্ত্রী ছিলেন জেনারেল ম্যানেজার। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পাশ্চাত্যের অনেক সাধারণ মানুষের মধ্যে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করতে ‘ব্রিজ টিভি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে ২০০৭ সালে ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স’ এর অ্যাওয়ার্ড পান সৈয়দ মোজাম্মেল।