খেলাধুলা

যুব বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং করবেন মুকুল-সোহেল

ফাঁকা মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। কোনো ব্যস্ততা নেই। নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে ক্রিকেটাররাও যে যার মতো বিশ্রামে, কয়েক জন মাগুরায় জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। বলা যায়, আগামী ১৯ জানুয়ারি বিপিএল শুরুর আগ অবদি এমন চিত্রই থাকবে হোম অব ক্রিকেটের। তবে এই মুহূর্তে বিসিবির ব্যস্ততা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ নিয়ে। গেল মাসে যুবারা প্রথম বারের মতো এশিয়া কাপ নিয়ে দেশে ফেরার পর থেকেই দ্বিতীয় বারের মতো শিরোপা জয়ের হাত ছাঁনি দেখছে সবাই। তবে শুধু টাইগার যুবারা নয়, এবারের আসরে দলের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করবে দুই আম্পায়ারও। তারা হলেন—মাসুদুর রহমান মুকুল ও গাজী সোহেল। মঙ্গলবার বিসিবির একাডেমি ভবনের সামনে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এই দুই আম্পার। দুজনের কণ্ঠেই ছিল একই সুর, এই আসরটিতে ভালো করে এগিয়ে যাবেন আরো সামনে। সেই লক্ষ্যে যুবাদের এই বিশ্বকাপকে নিয়েছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। এ প্রসঙ্গে মুকুল বলেন, ‘আমরা দুজনই খুব রোমাঞ্চিত। এখানে আমাদের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে আমাদের উন্নতিই শুধু না বাংলাদেশের সম্মানও জড়িত। এটাকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি। যুব বিশ্বকাপ আমাদের জন্য নতুন না। আমরা জানি যে আম্পারিংয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে হয় তাহলে এই রকম টুর্নামেন্ট আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ আগামী ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে বিশ্বকাপ। এর আগে আগামী ৭ জানুয়ারি মুকুল-সোহেলদের ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে। দুজনে এর আগে যুবাদের বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন ছাড়াও এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করেছেন। এবার পালা নিজেদের আরো শাণিত করার। এ প্রসঙ্গে গাজী সোহেল বলেন, ‘আমরা যুব বিশ্বকাপে ভালো করতে পারলে আমাদের র্যাংকিংয়ও বাড়বে। বাংলাদেশের আম্পায়ারদের ইমেজও বাড়বে। আমরা ভালো করলে আমাদের দেখে ভবিষ্যতে আরো আম্পায়াররা উঠে আসবে। সৈকত ভাই যেমন দুই বছরের মধ্যে আইসিসি এলিট প্যানেলে চলে আসবেন। সেটা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। করোনার আগে আমাদের ইমেজসংকট ছিল। করোনার পর যখন সুযোগ পেলাম আমরা ধারাবাহিক ভালো করেছি। আইসিসি থেকে উদ্দীপনামূলক মেইলও আমরা পেয়েছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় সৈকত ভাই এখন বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং করেছে, টেস্টে করবে। মুকুল ভাই এশিয়া কাপে করেছে। এখন বিপিএলে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যাবহারে আমরা আরো ভালো করেছি।’ এদিকে ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ার নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই সমালোচনা হচ্ছে। সেখানে হরহামেশাই বিতর্কিত আম্পায়ার কল নিয়ে দলগুলো এবং খেলোয়াড়দের অভিযোগ করতে দেখা যায়। শুধু তা-ই নয়, একবার তো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আম্পায়ারের বিতর্কিত কল দেখে স্টাম্পে লাথি দিয়ে প্রতিবাদ করে জরিমানাও গুনেছেন। তবে পরিবর্তন হয়নি কোনো কিছুই। এ প্রসঙ্গে মুকুল বলেন, ‘আম্পায়াররা বাদে সবাই চিন্তা করে যে তারা শতভাগ পারফ্যাক্ট হবে যেটা আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব না। এতে করে আমাদের ওপর একটা চাপ সৃষ্টি হয়, যা আমাদের নরমাল আম্পায়ারিং করতে আরো বাঁধা গ্রস্ত করে। আমি কখনোই বলব না সমালোচনা হচ্ছে যে আম্পায়ার দায়ী না। অবশ্যই আমরা দায়ী। কিন্তু আমারদের সংখ্যা দেখবেন অনেক কম। একটা আছে ইচ্ছাকৃত আরেকটা আছে ভুলবশত। ভুলবশত যেটা ঘটে যায় তখন সেটাকে ইচ্ছাকৃত হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয়।’ এ সময় নিজেদের দোষের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভিত্তিক গণমাধ্যমগুলোরও দায় রয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আপনারা যেই ক্লিপসগুলো দেখান আপনাদের কি মনে হয়, একটা মানুষের পক্ষে খালি চোখে এত সূক্ষ্ম জিনিস ধরে সিদ্ধান্ত দেওয়া। এটা খুবই কঠিন। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ ভিত্তিক গণমাধ্যম, তারা যখন কিছু কিছু ক্লিপস দেখায় যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। একটা ফিফটি ফিফটি রান আউট কিংবা একটা স্টাম্পিং যখন ভাইরাল হয়ে যায় তখন একবার চিন্তাও করে না এই আউটটা কি খালি চোখে দেওয়া সম্ভব কি না। তারপর অনেক সময় বলে একটা আম্পার একটা ভুল করেছে দুইটা ভুল করেছে, আপনারা কি দেখেন একটা ম্যাচে আম্পায়ার কতগুলো আপিল রিসিভ করে। সে যদি ২০টা আপিল রিসিভ করে তাহলে তার তো সবগুলোতেই ডিসিশন দেওয়া লাগে। এর মধ্যে যদি দুই একটা ভুল করে সেটাকেই আমরা বড় করে দেখি। তার মানে এই না যে, আমরা ভুল করছি না।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস