পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তিতে মালয়েশিয়া প্রবাসীরা। যতই দিন যাচ্ছে, বাড়ছে ভোগান্তি। প্রবাসীদের অভিযোগ, আবেদনের পর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও মিলছে না পাসপোর্ট। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, ছয় মাসেও হাতে পাচ্ছেন না পাসপোর্ট।
একদিকে চলমান মহামারি করোনায় আইনী শিকলে কর্মহীন প্রবাসীদের দুশ্চিন্তা, অন্যদিকে সময়মত পাসপোর্ট না পাওয়াতে ভিসা রিনিউ করতে পারছেন না। পারছেন না অংশ নিতে মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া বৈধ হওয়ার রিক্যালিব্রেসি প্রোগ্রামে। যেহেতু কুটনৈতিক তৎপরতায় বৈধ হওয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত । সেহেতু পাসপোর্ট জটিলতার নিরসন না হলে হারাবে বৈধ হওয়ার সুযোগ। পাশাপাশি এ জটিলতায় ভিসা রিনিউ না করলে কমপক্ষে লক্ষাধিক কর্মী অবৈধ হয়ে পড়বেন বলে করছেন মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসীরা।
গত এক মাসের অধিক সময় ধরে দূতাবাস থেকে সরাসরি পাসপোর্ট বিতরণ বন্ধ রয়েছে। একমাস আগে পাসপোর্ট শাখার কয়েকজন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সরাসরি পাসপোর্ট বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সময়ে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট বিতরণ করা হলেও তা যথেষ্ট নয়। রয়েছে জটিলতাও। তাছাড়া পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট পেতে হলে কয়েক ধাপে অনলাইনে নিবন্ধন বা এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। বেশিরভাগ প্রবাসী পাসপোর্ট ফরম পুরণ করতেই হিমশিমে পড়েছেন। সেখানে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট উত্তোলনে জটিলতা সহ নানামূখী সমস্যা পোহাতে হচ্ছে তাদের। আগে যেখানে আমপাং পাসপোর্ট অফিস থেকে দৈনিক ৯০০ থেকে ১১০০ শ পাসপোর্ট বিতরণ করা হত, বর্তমানে সরাসরি বিতরণ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় পাসপোর্ট পেতে প্রবাসীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ৬ মাসেরও বেশি সময় পার করেও তারা পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না।
নারায়ণগঞ্জের মোঃ মোস্তাক আহমেদ বলেন, ৬ মাস আগে পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন করেছেন, এ্যাপয়েন্টমেন্ট ও বারকোট নিতে গেলে এরোর আসে। আবার এ্যাপয়েন্টন্ট নিতে গেলে আজকের কৌটা পূরণ হয়ে গেছে, পরবর্তীতে আবার চেষ্টা করুন। কবে হাতে পাসপোর্ট পাবেন সংশয়ে রয়েছেন তিনি।
কুমিল্লা দেবিদ্দারের জালাল উদ্দীন জানান, দেড় মাসের বেশি সময় হয়ে গেছে পাসপোর্ট আবেদন করেছি, এখনো এনরোলমেন্ট হয়নি।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের দূতালয় প্রধান, প্রথম সচিব রাজনৈতিক, রুহুল আমিন এ প্রতিবেদককে জানান, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী সকল ধরণের কার্যক্রম স্বাভাবিক গতি হারিয়েছে।
বাংলাদেশ হাই কমিশনের সেবা কার্যক্রমও চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । এর মাঝেও হাই কমিশন প্রবাসীদের কাছে দ্রুত পাসপোর্ট পৌঁছে দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়াব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী লকডাউনের কারণে প্রবাসীরা যথাসময়ে পাসপোর্ট পেতে বেগ পেতে হচ্ছে, তদুপরি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। সম্প্রতি পাসপোর্ট কার্যক্রম আরো গতিশীল করা হয়েছে, যার সুফল ইতোমধ্যে প্রবাসীরা পেতে শুরু করেছেন এবং প্রবাসীরা তাদের নিকটস্থ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছে। গত ৬/৭ মাসে হাইকমিশন প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার নতুন পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে প্রবাসীদের প্রযুক্তি-নির্ভর আধুনিক এবং নতুন নতুন সেবার মাধ্যমে বাংলাদেশ হাইকমিশন উদাহরণ সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বিষয়ে হাইকমিশন সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গোলাম সারোয়ার বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জীবনের ঝুকি নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসীদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দুতাবাসের অর্ধেকের মত কর্মকর্তা/কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যগন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন এবং একজন কর্মচারী অকালে মৃত্যু বরণ করেছেন। কিন্তু প্রবাসী ভাই-বোনদের সেবার স্বার্থে দুতাবাস একদিনের জন্যও বন্ধ করা হয়নি। সুতরাং দুতাবাসের প্রতি আস্থা রাখুন এবং মুষ্টিমেয় কিছু স্বার্থান্বেসী সুবিধাবাদীর অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন হাইকমিশনার গোলাম সারোয়ার।
সমস্যা সমাধানে প্রবাসীরা বলছেন, বাংলাদেশ হাই কমিশনে জনবলসহ সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যাংক ড্রাফ্ট এর পাশপাশি অনলাইনে পেমেন্ট পদ্ধতি চালু করতে হবে। পাসপোর্ট সমস্যা সমাধানের জন্য মালয়েশিয়াতেই পাসর্পোট তৈরির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রবাসীরা আরো বলেন, মনে রাখতে হবে, মালয়েশিয়া প্রবাসীরাই বাংলাদেশে সিংহভাগ রেমিট্যান্স পাঠায়, অতএব দল ও মতের উর্ধ্বে প্রবাসীদের পাশে থেকে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের মান সমুন্নত রাখার দায়িত্ব সবার উপরেই বর্তায়।
এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এ
[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]
একদিকে চলমান মহামারি করোনায় আইনী শিকলে কর্মহীন প্রবাসীদের দুশ্চিন্তা, অন্যদিকে সময়মত পাসপোর্ট না পাওয়াতে ভিসা রিনিউ করতে পারছেন না। পারছেন না অংশ নিতে মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া বৈধ হওয়ার রিক্যালিব্রেসি প্রোগ্রামে। যেহেতু কুটনৈতিক তৎপরতায় বৈধ হওয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত । সেহেতু পাসপোর্ট জটিলতার নিরসন না হলে হারাবে বৈধ হওয়ার সুযোগ। পাশাপাশি এ জটিলতায় ভিসা রিনিউ না করলে কমপক্ষে লক্ষাধিক কর্মী অবৈধ হয়ে পড়বেন বলে করছেন মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসীরা।
গত এক মাসের অধিক সময় ধরে দূতাবাস থেকে সরাসরি পাসপোর্ট বিতরণ বন্ধ রয়েছে। একমাস আগে পাসপোর্ট শাখার কয়েকজন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সরাসরি পাসপোর্ট বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সময়ে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট বিতরণ করা হলেও তা যথেষ্ট নয়। রয়েছে জটিলতাও। তাছাড়া পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট পেতে হলে কয়েক ধাপে অনলাইনে নিবন্ধন বা এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। বেশিরভাগ প্রবাসী পাসপোর্ট ফরম পুরণ করতেই হিমশিমে পড়েছেন। সেখানে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট উত্তোলনে জটিলতা সহ নানামূখী সমস্যা পোহাতে হচ্ছে তাদের। আগে যেখানে আমপাং পাসপোর্ট অফিস থেকে দৈনিক ৯০০ থেকে ১১০০ শ পাসপোর্ট বিতরণ করা হত, বর্তমানে সরাসরি বিতরণ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় পাসপোর্ট পেতে প্রবাসীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ৬ মাসেরও বেশি সময় পার করেও তারা পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না।
নারায়ণগঞ্জের মোঃ মোস্তাক আহমেদ বলেন, ৬ মাস আগে পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন করেছেন, এ্যাপয়েন্টমেন্ট ও বারকোট নিতে গেলে এরোর আসে। আবার এ্যাপয়েন্টন্ট নিতে গেলে আজকের কৌটা পূরণ হয়ে গেছে, পরবর্তীতে আবার চেষ্টা করুন। কবে হাতে পাসপোর্ট পাবেন সংশয়ে রয়েছেন তিনি।
কুমিল্লা দেবিদ্দারের জালাল উদ্দীন জানান, দেড় মাসের বেশি সময় হয়ে গেছে পাসপোর্ট আবেদন করেছি, এখনো এনরোলমেন্ট হয়নি।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের দূতালয় প্রধান, প্রথম সচিব রাজনৈতিক, রুহুল আমিন এ প্রতিবেদককে জানান, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী সকল ধরণের কার্যক্রম স্বাভাবিক গতি হারিয়েছে।
বাংলাদেশ হাই কমিশনের সেবা কার্যক্রমও চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । এর মাঝেও হাই কমিশন প্রবাসীদের কাছে দ্রুত পাসপোর্ট পৌঁছে দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়াব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী লকডাউনের কারণে প্রবাসীরা যথাসময়ে পাসপোর্ট পেতে বেগ পেতে হচ্ছে, তদুপরি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। সম্প্রতি পাসপোর্ট কার্যক্রম আরো গতিশীল করা হয়েছে, যার সুফল ইতোমধ্যে প্রবাসীরা পেতে শুরু করেছেন এবং প্রবাসীরা তাদের নিকটস্থ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছে। গত ৬/৭ মাসে হাইকমিশন প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার নতুন পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে প্রবাসীদের প্রযুক্তি-নির্ভর আধুনিক এবং নতুন নতুন সেবার মাধ্যমে বাংলাদেশ হাইকমিশন উদাহরণ সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বিষয়ে হাইকমিশন সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গোলাম সারোয়ার বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জীবনের ঝুকি নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসীদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দুতাবাসের অর্ধেকের মত কর্মকর্তা/কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যগন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন এবং একজন কর্মচারী অকালে মৃত্যু বরণ করেছেন। কিন্তু প্রবাসী ভাই-বোনদের সেবার স্বার্থে দুতাবাস একদিনের জন্যও বন্ধ করা হয়নি। সুতরাং দুতাবাসের প্রতি আস্থা রাখুন এবং মুষ্টিমেয় কিছু স্বার্থান্বেসী সুবিধাবাদীর অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন হাইকমিশনার গোলাম সারোয়ার।
সমস্যা সমাধানে প্রবাসীরা বলছেন, বাংলাদেশ হাই কমিশনে জনবলসহ সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যাংক ড্রাফ্ট এর পাশপাশি অনলাইনে পেমেন্ট পদ্ধতি চালু করতে হবে। পাসপোর্ট সমস্যা সমাধানের জন্য মালয়েশিয়াতেই পাসর্পোট তৈরির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রবাসীরা আরো বলেন, মনে রাখতে হবে, মালয়েশিয়া প্রবাসীরাই বাংলাদেশে সিংহভাগ রেমিট্যান্স পাঠায়, অতএব দল ও মতের উর্ধ্বে প্রবাসীদের পাশে থেকে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের মান সমুন্নত রাখার দায়িত্ব সবার উপরেই বর্তায়।
এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এ
[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]