মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স মঙ্গলবার ইসরায়েলে পৌঁছেছেন, এমন সময়ে যখন ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়তে পারে। সিএনএনকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভ্যান্সের এই সফর মূলত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যাতে যুক্তরাষ্ট্র-আলোচিত চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকেন, তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা পরিস্থিতিকে রসিকতার ছলে বর্ণনা করে বলেছেন, এটি “বিবি-সিটিং” — অর্থাৎ নেতানিয়াহুকে নজরে রাখার উদ্যোগ। অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, এটি প্রেসিডেন্টের পর প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার উপস্থিতি, যা একটি “শক্তিশালী বার্তা” যে যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট টেকসই হতে হবে, যাতে ক্ষুদ্র সংঘাতও সেটিকে ভাঙতে না পারে।
সূত্রগুলো জানায়, মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করছেন যুদ্ধবিরতি এখন সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তাই ট্রাম্পের গত সপ্তাহের সফরের পরপরই ভ্যান্সের যাত্রা জরুরি হয়ে পড়ে। উদ্বেগ আরও বাড়ে যখন ইসরায়েল অভিযোগ করে যে সপ্তাহান্তে হামাসের হামলায় দুই আইডিএফ সেনা নিহত হয়, যার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা চালায়, যেখানে ডজনখানেক মানুষ নিহত হয়।
মার্কিন কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাটির প্রভাব কমাতে ও যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে কাজ করেন। যদিও উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে, শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতির প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা জ্যারেড কুশনার — যারা শান্তি চুক্তির মূল স্থপতি — তারাও এই সপ্তাহে ইসরায়েলে অবস্থান করছেন। তারা প্রেসিডেন্টের ঘোষিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছেন।
ইসরায়েলি সূত্র জানায়, উইটকফ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বলেন, হামাসের সহিংসতার প্রতিক্রিয়া যেন লঙ্ঘনের মাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, এবং আগামী ৩০ দিন এই চুক্তি টিকিয়ে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ দিচ্ছেন যাতে হামাসকে নিরস্ত্র করার পদক্ষেপ আলোচনার দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার আগে সম্পন্ন হয়।
ইসরায়েলে পৌঁছেই ভ্যান্স উইটকফ ও কুশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং মঙ্গলবার সকাল ১১টায় (ইস্টার্ন টাইম) সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।
সবকিছুর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, গত রবিবারের হামলা হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে নয়, বরং কিছু “বিদ্রোহী সদস্যের” কাজ। তিনি বলেন, “কিছু হামাস সদস্য অতিরিক্ত উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়েছিল,” তবে তার বিশ্বাস, সংগঠনটি এখনও যুদ্ধবিরতি ও আলোচনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়েছেন, যদি প্রয়োজন হয়, “হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল” করা হবে।
তিনি মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, মধ্যপ্রাচ্যের “বড় মিত্ররা” গাজায় প্রবেশ করে হামাসকে “শৃঙ্খলায় আনতে আগ্রহী”, কিন্তু তিনি তাদের বলেছেন “এখন নয়”, কারণ এখনও আশা আছে যে হামাস “সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।”
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম