বাংলাদেশ

শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের ওপর ফের ছাত্রলীগের হামলা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন-নির্যাতন-গ্রেফতারের প্রতিবাদে শহিদ মিনারে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

১৫ জুলাই, রবিবার দুপুরে শহিদ মিনার এলাকার শিববাড়ি মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টায় শহিদ মিনারে অবস্থান নেয় নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তখন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও আশেপাশে অবস্থান নেন। তারাও নানা রকমের শ্লোগান দিয়ে এই কর্মসূচিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। পরে ওই কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে শিববাড়ি মোড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঘিরে ধরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এবং শিক্ষার্থীদের মারধর করে।

এ সময় সামনের সারিতে থাকা শিক্ষকরাও লাঞ্ছিত হন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খানসহ অন্যান্য শিক্ষকদের ধাক্কা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

এই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ শহীদ মিনারে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত নিপীড়নবিরোধী কর্মসূচি ছিল। আমাদের মাইক চালু হওয়ার পর ছাত্রলীগও দাঁড়িয়ে যায় পাশে। তারাও মাইক ব্যবহার করে। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করার চেষ্টাও চলে। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করে ফেরার পথে আমাদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর হামলা হয়, শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়।’

ফাহমিদুল হক আরও বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। নিপীড়নের শিকার শিক্ষার্থীদের পক্ষে শিক্ষক হিসেবে পাশে দাঁড়ানো আমার নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এমন কর্মসূচি যদি আমরা করতে না পারি, তবে জাতি হিসেবে সেটা আমাদের জন্য লজ্জার।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই শিক্ষক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রক্টরিয়াল টিমের কেউ আশেপাশে ছিলেন না, একজন পুলিশও ছিলেন না। শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ যেন হামলা করতে পারে, তার জন্য উন্মুক্ত করে রাখা হয় সবকিছু। আমরা থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা একটু কম হয়েছে।’

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এ সময় তারা উপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের “জামায়াত-শিবির” বলে গালাগালি দিয়েছে। আর মানববন্ধন শেষে যাওয়ার সময় হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি