বাংলাদেশ

সড়ক পরিবহন আইন অনুমোদন: সর্বোচ্চ সাজা ৫ বছর জেল

বেপরোয়াভাবে বা অবহেলা করে গাড়ি চালানোর ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বা গুরুতর আহত হলে চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছরের জেল বা অর্থ জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। তবে তদন্তে যদি হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হয়, তাহলে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ৩০২ দণ্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তি হবে। এসব বিধান রেখে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মন্ত্রিসভায় নতুন পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হলো।

নতুন আইনের খসড়ায় অন্যান্য বিধানের মধ্যে রয়েছে–
১. ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে অপেশাদার চালকদের বয়স ১৮ এবং পেশাদার চালকদের বয়স ২১ হতে হবে।

২. ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য চালককে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। আর চালকের সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস হতে হবে।

৩. ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

৪. চালকের জন্য ১২ পয়েন্ট বরাদ্দ থাকবে। বিভিন্ন বিধি অমান্যে এই পয়েন্ট কাটা যাবে। পয়েন্ট শূন্যে নেমে আসলে ওই চালকের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

৫. গাড়ি চালানোর সময় চালক মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।

৬. চালকের সহকারী না থাকলে এক মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

৭. পোশাকধারী পুলিশের সামনে কোনো চালক অপরাধ করলে, কোনো পরোয়ানা ছাড়াই ওই চালককে গ্রেফতার ও জরিমানা করতে পারবেন পুলিশ।

৮. বিআরটিএ’র যেকোনো শাখায় রেজিস্ট্রেশন বা নবায়ন করতে পারবেন মোটরযানের মালিকরা। মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তিত হলে তা ৩০ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

৯. সড়কের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ব্যক্তি বা পরিবার বা প্রতিষ্ঠান বা কোনো এলাকার জন্য মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বা সীমা নির্ধারণ করা হবে।

১০. লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনা করতে পারবে না।

গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দেয় ‘জাবালে নূর’ পরিবহনের একটি বাস। এতে শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। চলমান আন্দোলনের মধ্যে গত ১ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, সড়ক পরিবহন আইন অনুমোদনের জন্য সোমবার মন্ত্রিসভায় উঠবে।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি