বাংলাদেশ

জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আজ ৩০ মে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদৎবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর কিছু বিপদগামী সদস্যের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার এই স্বপ্নদ্রষ্টা। শোকাবহ এই দিনটি স্মরণে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বলা হয় আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। তিনিই জাতির সঙ্কটময় মুহূর্তে বারবার দাঁড়িয়েছেন নির্ভয়ে মাথা উঁচু করে। বিপর্যস্ত জাতিকে রক্ষা করেছেন সর্বোচ্চ ঝুঁঁকি নিয়ে। ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিশেহারা জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সাহস জুগিয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই তিনি ক্ষান্ত থাকেননি, দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য হানাদারদের বিরুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার এ অতুলনীয় ভূমিকা ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত এক পরিস্থিতি থেকে দেশ মুক্তি পায় ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে। আর এই বিপ্লবের প্রাণপুরুষ ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি একদলীয় বাকশালের রাহুমুক্ত করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। নিশ্চিত করেন বাক-ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা।
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কালজয়ী দর্শনের বক্তা জিয়াউর রহমান জাতির নিজস্ব পরিচয় তুলে ধরেন। তার অন্যতম উপহার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পতাকাবাহী রাজনৈতিক দল ‘বিএনপি’। তার শাহাদাতের পর সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া দলের হাল ধরেন। তার প্রতিষ্ঠিত দল তিনবার জনগণের ভোটে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পান।

জিয়াউর রহমান আমৃত্যু যুদ্ধ করেছেন ক্ষুধা, দারিদ্র্য, শ্রেণিবৈষম্য ও নিরক্ষতার বিরুদ্ধে। জাতিকে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। রক্তস্নাত স্বাধীন বাংলাদেশকে তিনি গণতন্ত্রের আস্বাদ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার গাবতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অসামান্য অবদানের জন্য স্বাধীনতা পরবর্তীতে তাকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তার ডাক নাম ছিল ‘কমল’। বাবা মনসুর রহমান ও মা জাহানারা খাতুনের দ্বিতীয় ছেলে কমল ছোটবেলা থেকেই লাজুক ও গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন। বাবার চাকরির সুবাদে কলকাতায় তার বাল্যপাঠ শুরু হয় সেখানকার হেয়ার স্কুলে। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৭ সালে বাবার সাথে করাচি চলে যান তিনি। জিয়াউর রহমান ছিলেন মেধাবী ছাত্র। ১৯৫৩ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং কমিশন পান ১৯৫৫ সালে। ১৯৬৬ সালে তিনি কাবুলে পাকিস্তান সামরিক একাডেমিতে ইন্সপেক্টর হন এবং একই বছর শেষদিকে কোয়েটা স্টাফ কলেজে যোগদান করেন। ১৯৭০ সালের অক্টোবরে নবগঠিত অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দায়িত্ব দিয়ে তাকে পাঠানো হয় চট্টগ্রামে।

বিএনপির ভিন্নধর্মী কর্মসূচি : শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে অন্যান্য বছরের মতো এবার জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকছে না। এবার ভিন্নধর্মী কর্মসূচি পালন করবে দলটি। গত ১৮ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক সভায় নেতৃবৃন্দ সর্বসম্মতিক্রমে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকীর কর্মসূচি গ্রহণ করেন। সভায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এরমধ্যে থাকবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, বস্ত্রবিতরণ ও আর্থিক সহযোগিতা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এন