বাংলাদেশ

জাপানি মায়ের কাছে যায়নি মেজো মেয়ে

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী একদিন বাবার কাছে এবং একদিন জাপানি মায়ের কাছে থাকার কথা ছিল শিশু নাকানো লায়লা লিনার। কিন্তু সে শুক্রবার তার মায়ের কাছে যায়নি। এ কারণে পুলিশ তাকে বাবা প্রকৌশলী ইমরান শরীফের কাছে দিয়েছে। এদিকে জাপানি মায়ের আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, শিশুটিকে তার মায়ের কাছে দেওয়া হয়নি। এটি আদালত অবমাননার শামিল। গুলশান থানার ওসি ফরমান আলী বলেন, মেয়েটিকে নিয়ে তার বাবা শুক্রবার থানায় এসেছিলেন। তাকে নিতে তার মাও থানায় এসেছিলেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত চেষ্টা করা হয়েছে। শিশুটি মায়ের কাছে যেতে চায়নি। পরে আমরা তাকে তার বাবার হেফাজতে দিয়ে দিয়েছি। আদালতের নির্দেশনা ছিল পারিবারিক আদালতে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই শিশুর মধ্যে মেজো মেয়ে নাকানো লায়লা লিনা বাবার কাছে একদিন ও মায়ের কাছে একদিন করে থাকবে। আর পারিবারিক আদালতের দেওয়া রায় অনুযায়ী বড় মেয়ে মায়ের কাছেই থাকবে। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে ২৯ জানুয়ারি বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে দুই সন্তান তার মায়ের জিম্মায় থাকবে বলে রায় দেন আদালত। কিন্তু রায়ের পর থেকে মেজো মেয়ে লিনার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন জাপানি মা। এরপর বুধবার ভোরে কালাচাঁদপুরে আত্মগোপন করা বাবা ইমরান ও মেয়ে লিনাকে গুলশান থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‌্যাব। পুলিশ শিশুটিকে উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে রাখে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে মা নাকানো এরিকো তার বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে ইমিগ্রেশন পুলিশ বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয়। তাছাড়া মায়ের জিম্মায় সন্তানদের দেওয়ার রায়ের বিরুদ্ধে ইমরান শরীফ পারিবারিক আপিল আদালতে আপিল করেছেন। যার শুনানি হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি। বৃহস্পতিবার সকালে দুই শিশু নাকানো লায়লা লিনা ও নাকানো জেসমিন মালিকা ও তাদের বাবা-মা ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে হাজির হন। জাপানি মায়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। তিনি ওই সন্তানকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রার্থনা করেন। আর বাবার পক্ষে শুনানি করেন নাসিমা আক্তার লাভলী। তিনি লিনাকে বাবার হেফাজতে রাখার প্রার্থনা করেন। শুনানি নিয়ে বিচারক দুই সন্তানের সঙ্গে কথা বলেন। দুজনের মধ্যে ছোট লায়লা লিনা বিচারকের খাস কামরায় জানায়, সে বাবার কাছে থাকতে চায়। আদেশের আগে বিচারক বলেন, লিনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে বাবার কাছে থাকতে চায়। না হয় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যেতে চায়। সে মায়ের সঙ্গে জাপানে যেতে চায় না। তবে বলেনি মায়ের কাছে থাকবে না। এরপর নতুন আদেশ দেন বিচারক। আদালত জানান, আপিল শুনানি পর্যন্ত লায়লা লিনা একদিন তার মা নাকানো এরিকোর কাছে এবং আরেকদিন বাবা প্রকৌশলী ইমরান শরীফের কাছে থাকবে। এরপর বৃহস্পতিবার সে বাবার কাছেই ছিল। শুক্রবার তাকে মায়ের কাছে দেওয়ার কথা ছিল।



এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস