বাংলাদেশ

ভারতের লাদাখের রাজধানী লেহতে আমরণ অনশনে সোনম ওয়াংচুক

লাদাখে আন্দোলনরত বিশিষ্ট পরিবেশকর্মী ও শিক্ষাবিদ ম্যাগসাইসাই পুরস্কারজয়ী বাস্তবের ‘র‌্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুক বেনামে এক হুঁশিয়ারি চিঠি পেয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, তাঁর প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের সবকিছু কেন্দ্রীয় আর্থিক অনিয়ম তদন্তকারী সংস্থা (ইডি) জোগাড় করেছে। তাই তাঁকে আগে থেকে সাবধানী হতে অনুরোধ করা হয়েছে। আরও লেখা হয়েছে, ঠিক এইভাবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ব্যাংক হিসাবও নেওয়া হয়েছিল। সোনম ওয়াংচুক নিজেই গতকাল সোমবার এক ভিডিও বার্তায় ওই চিঠি ও তার সারমর্ম জানিয়ে বলেছেন, কোথাও কিছু একটা ষড়যন্ত্র পাকানো হচ্ছে। লাদাখের লোকজন ভালোবাসেন বলেই এভাবে তাঁকে সজাগ করে দিয়েছেন।
আমির খানের জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’–এর নায়ক ফুংসুক ওয়াংচুক চরিত্রটি যাঁর আদলে তৈরি, পর্দায় যাঁর নাম ছিল ‘র‌্যাঞ্চো’, তিনিই বাস্তবের সোনম ওয়াংচুক। ৫৭ বছর বয়সী এই প্রকৌশলী ও উদ্ভাবক লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা, পরিবেশ রক্ষাসহ কয়েকটি দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ কর্মসূচি পালন করেন। লাদাখের পর্বতরাজি বিভিন্ন শিল্প সংস্থা ও খনির কারবারিদের কাছে বেচে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার এই বিস্তীর্ণ এলাকাকে কাশ্মীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ওয়াংচুক ১০ হাজার লাদাখবাসীর সঙ্গে গলওয়ান এলাকায় মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, ২০২০ সালের জুনে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর চীন কতটা জমি ছিনিয়ে নিয়েছে, তা দেখা। কেন্দ্রশাসিত লাদাখের প্রশাসন তাঁদের সেই অনুমতি দেয়নি। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল মিছিল রুখতে।
ওয়াংচুক অবশ্য দমে যাননি। লাদাখবাসীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি অনশন সত্যাগ্রহ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। লাদাখের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন তাঁর আন্দোলনে সমর্থন জানাচ্ছেন। ঠিক এই সময়েই ওই চিঠি। গতকাল প্রচারিত ওই ভিডিওতে সোনম ওয়াংচুক নিজেই এর উল্লেখ করেন। ভিডিও বার্তায় ওয়াংচুক বলেন, যে মানুষটি তাঁকে ওই চিঠি দিয়ে চলে গেছেন, তিনি তাঁকে চেনেন না। তাঁর ধারণা, বাইরের অন্য কেউ ওই চিঠিটি তাঁকে দিতে ওই ব্যক্তিকে দিয়েছিলেন। একটি সাদা খামের মধ্যে ওই চিঠিটি ছিল। খামটি ‘স্টেপল’ করা ছিল। ওয়াংচুক বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম চিঠিটির কথা জানাব না। কিন্তু তারপর ভেবে দেখলাম, সবাইকে জানানোই ভালো। চিঠিতে লেখা, “স্যার, এই চিঠি লেখার উদ্দেশ্য একটাই। আপনাকে সতর্ক ও সজাগ করে দেওয়া। আপনার সংস্থার ব্যাংক হিসাব সম্প্রতি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অ্যান্টি মানি লন্ডারিং বিভাগ নিয়ে গেছে। কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই হয়েছিল। এ কথা আপনাকে জানানোর কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু ভেবে দেখলাম জানানো উচিত। খুব বেশি দেরি হওয়ার আগে আপনি যাতে সজাগ ও সতর্ক হতে পারেন।”’ এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস