বাংলাদেশ

ইসি গঠনে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব জেএসডির

নির্বাচনকালীন সরকারের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের ‘উচ্চকক্ষ’ গঠন করা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত বিস্তৃত পৃথক সচিবালয়সহ নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি।

বঙ্গভবনে শনিবার বেলা ৩টা ৩৫ থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করে দলটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

বৈঠক শেষে দলটির সভাপতি আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে চলমান পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। পাঁচ মিনিটে বাকশাল পাস হয়েছিলো এ আইন করতে বেশি সময় লাগবে না।’

দলটির পক্ষ থেকে ৩ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে : পার্লামেন্টের ‘উচ্চকক্ষ’ গঠন করে সেখান থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিধান করা; ‘উচ্চকক্ষ’সহ পার্লামেন্ট হবে ‘দ্বি-কক্ষ’ বিশিষ্ট। অঞ্চলভিত্তিক প্রতিনিধি নিয়ে পার্লামেন্টের ‘নিম্নকক্ষ’ হবে ৩০০ সদস্য বিশিষ্ট। ২০০ সদস্য বিশিষ্ট ‘উচ্চকক্ষে’ থাকবেন ‘অদলীয়’ভাবে নির্বাচিত বিভিন্ন শ্রম-কর্ম-পেশার প্রতিনিধি, ‘নিম্নকক্ষ’র নির্বাচনে বিভিন্ন দলের প্রাপ্ত আসনের আনুপাতিক প্রতিনিধি, প্রবাসীদের মধ্য থেকে অন্তত ১০ জন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীতি প্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রাদেশিক পরিষদ (গঠনের পর) প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধি, নারী প্রতিনিধি ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রতিনিধি। নির্বাচনের পূর্বে এ ‘উচ্চকক্ষ’ থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পর সে সরকারের পরামর্শ মোতাবেকই নির্বাচন কমিশন গঠনের বিধান করতে হবে। একইভাবে নির্বাচন কমিশনের গঠন কাঠামো এবং ক্ষমতাও নির্ধারিত হবে। বর্তমান পার্লামেন্টে সরকারি দল ও জোটের যে অবস্থান এতে সহজেই সংবিধান সংশোধন করে এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা সম্ভব।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে রয়েছে : গণতন্ত্রের জন্য-এর ভিতকে সম্প্রসারিত, সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বেকারত্বের অবসান অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে প্রস্তাবে বলা হয়, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, গণতন্ত্রকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত করা ও শিল্পাঞ্চলসমূহের জন্য রাজনৈতিক-প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে প্রাদেশিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা; জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিষদের প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি ও নির্বাচন সঠিকভাবে অনুষ্ঠান করা। মেট্রোপলিটন সরকার ও গ্রাম সরকার গঠন করা; সর্বস্তরের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে অদলীয়ভাবে নির্বাচিত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা, নারী ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

তৃতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য বাংলাদেশ, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, চীনের কুনমিং, নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে ‘উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা, কানেক্টিভিটি ও পরিবহন অর্থনীতি জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।

জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রধান হলেও আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এ ক্ষেত্রে সরকারই নিয়ামক ভূমিকা পালন করে। এ জন্য নির্বাচনকালীন সময়ে এখানে একটি দল নিরপেক্ষ, নির্বাচিত ও জবাবদিহিতামূলক সরকারের বিধান করা অপরিহার্য।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ গোফরান, সহ-সভাপতি দবিরউদ্দিন জোয়ার্দার, অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান মাস্টার, সহ-সভাপতি তানিয়া ফেরদৌসী, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতাউল করিম ফারুক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সিরাজ মিয়া, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আনসার উদ্দিন।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি