বাংলাদেশ

সত্যজিৎ রায়ের আদি বাড়িতে সাহিত্য অনুষ্ঠান

গত ২৭ এপ্রিল শুক্রবার কিশোরগন্জ জেলার সন্দীপনী সাহিত্য সংগঠন আয়োজন করেন সারা দিন ব্যাপী সাহিত্য সংস্কৃতি অনুষ্ঠান ।প্রধান অতিথি ছিলেন প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।সেখানে অধ্যাপিকা তাহমিনা জামান প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তযোদ্ধা কিশোরগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধে উপর বক্তব্য রাখেন। তার স্বামী ড়. খসরুজ্জামান চৌধুরী ১৯৭১ সালে তদানিন্তন কিশোরগন্জ মহকুমার মহকুমা প্রশাসক ছিলেন।সেই সময়ে  তিনি সরকারী উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তা হয়েও কিশোরগঞ্জে মুক্তি যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। নিজের জীবনের তোয়াক্যা না করে তিনি নিজে সই করে ট্রেজারী থেকে মোটা অংকের অর্থ দ্বিতীয় ইস্ট বেংগল রেজিমেন্টের অধিনায়ক মেজর জেনারেল শফিউল্লাহক হাতে তুলে দেন নবগঠিত মুজিবনগর সরকারকে সাহায্য করার জন্য। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে  তিনি তিন মাসের বেতন তুলে দেন তার অধিনস্ত কর্মচারীদের হাতে। তাদের নিরাপত্তার জন্যে।
২৯শে মার্চ, ১৯৭২এ খসরুজ্জামান চৌধুরী  স্হানীয় স্টেডিয়ামে জয় বাংলা প্রতিদ্ধনি তুলে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন এবং কিশোরগন্জবাসীদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করার জন্য উদ্বুদ্ধ্য করেন। কিশোরগন্জ তথা দেশ প্রেমিক খসরুজ্জামান  কিশোরগন্জবাসীদের উদ্দেশ্য করে তার মূল্যবান ভাষনে বলেন, " আপনাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব  আমার। কিশোরগঞ্জে যখন নিরাপত্তা থাকবে না তখন আমি রাতের আঁধারে লুকিয়ে যাবো না। আপনাদের জানিয়ে যাব যেন আপনারা নিরাপদ স্হানে চোলে যেতে পারেন।"
সেই কথা স্মরন করেই শত্রুসেনা প্রবেশকালে মাইকে প্রচার করেন তার কিশোরগন্জ ত্যাগের কথা। যাবার সময়ে নিরাপত্তার কথা ভেবেই  তার ড্রাইভার সুবোধবাবুর পরিবারকে তার নিজের গাড়ীতে তুলে নেন। কিশোরগন্জকে তিনি এতই ভালবাসতেন যে বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাদ্ধমে কিশোরগন্জকে রক্ষা করার জন্য তিনি আপ্রান চেষ্টা করেছেন। এমন কি কাজে মননিবেশ  করতে পারবেন বলে আট মাসের শিশু সন্তানসহ তার পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়ে কিশোরগন্জবাসীদের তিনি আগলে রেখেছেন। পরিবারের সংগে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।  উল্লেখ্য প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুন তার "আত্মকথা ১৯৭১"এ তরুন, সাহসি দেশপ্রেমিক  বীর মুক্তিযোদ্ধা তদানিন্তন কিশোরগঞ্জের মহকুমা প্রশাসক ড়. খসরুজ্জামান চৌধুরীর সাহসী কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করেছেন।