কলাম

ক্ষমতা দখলের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ‌‌‌‘করোনা’!

বিশ্ব অর্থনীতি বা ক্ষমতা দখল নিয়ে বহু বছর ধরে একটা স্নায়ূযুদ্ধ চলছিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে। যেটা পৃথিবীর সকলের কাছে ছিল ওপেন সিক্রেট। সবাই জানতেন বিশ্ববাজারে নিজেদের সেরা প্রমাণের জন্য সমাজতান্ত্রিক চীন ও পুঁজিবাদী আমেরিকার লড়াই শুরু হয় ৯০ এর দশক থেকেই। যা ২০০০ সাল থেকে প্রকট হতে থাকে। তবে সবকিছুকে এখন ছাপিয়ে বিশ্বে আলোচনার বিষয় করোনাভাইরাস। যার জন্ম হয়েছে, চীনের উহান শহরে। যে শহরেই রয়েছে ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ভাইরাসবিদ্যার অন্যতম বড় গবেষণাগার। যেটিকে পৃথিবীর অন্যতম সেরা ভাইরাসবিদ্যার গবেষণাগার হিসেবেও ধরা হয়। তাই প্রথম থেকেই নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা চলতে থাকে।

নভেম্বরে চীনে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়। তার আগে থেকেই কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা বিভাগগুলোতে। দক্ষিণ চীন সাগরে বেশ কিছু আমেরিকান চালকবিহীন ছোট ছোট সাবমেরিন পায় জেলেরা। যেগুলো যদিও অকেজো অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয়। কিন্তু সেই সময়ই চীন দাবি করে, সাবমেরিনগুলো যুক্তরাষ্ট্রের। যেগুলো দিয়ে হয় তারা চীনের উপর নজরদারি করছে অথবা চীন সাগরে বিশেষ কোনও প্রজেক্টে কাজ করছে। এরপর যখন করোনাভাইরাস চীনে ছড়াতে শুরু করলো তখন চাইনিজ আর্মির পক্ষ থেকে বলা হলো, সাবমেরিনগুলো মূলত ভাইরাস ছড়ানোর কাজ করেছে। তাই মাছের বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। এছাড়াও চাইনিজ গোয়েন্দারা কিছু ভিডিও ছাড়ে যাতে দাবি করা হয়, আমেরিকার এজেন্টরা ভাইরাস কাশি দিয়ে চীনের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ছড়াচ্ছে।
চীনের দাবিতে ঘি ঢালতে শুরু করেন রাশিয়ান গবেষকরা। তারা দাবি করেন, ভাইরাসটি অ্যাকটিভ করা হয় নিউইয়র্কের একটা গবেষণাগারে। ফলে আলোচনা শুরু হয়ে, যুদ্ধটা শুরু করেছে আমেরিকা, চীনকে ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এ অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে। দোষ চাপায় চীনের উপরই। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প তো এটাকে ‘চীনের ভাইরাস’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে কয়েকদিনের ভেতর ঘুরে যায় দৃশ্যপট। চীন ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে উঠলো। আর ছড়িয়ে পড়লো চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতে। আর সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত চীনের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপের দেশগুলো।

অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন এই বায়োলজিক্যাল অস্ত্র ব্যবহার করে অর্থনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি পৃথিবীর নেতৃত্বও নিয়ে নিলো চীন। আর এর পেছনের অন্যতম চালক হচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া। তাই তো অনেকেই বলছেন, কোনও গুলি না চালিয়েই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধটা জিতে নিলো চীন! আর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে, সৈনিকের চেয়ে অনেক বেশি সম্মান বেড়ে গেল যুদ্ধের ময়দানে ডাক্তার পেশার। আর গতানুগতিক অস্ত্রের দাম কমে বেড়ে গেল স্বাস্থ্য সূরক্ষা ইকুইপমেন্টের।

এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/সি