কলাম

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন উদ্যোগের অভাব

গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পর থেকে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে রুটিন বা দৈনন্দিন কার্যক্রম ছাড়া আর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এশিয়ার অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দেশেই এখনও নিয়োগ দেওয়া হয়নি মার্কিন রাষ্ট্রদূত। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বেশিরভাগ কর্মকর্তাও এখনও নিয়োগ পাননি। জনবলের এই সংকটের কারণেই মূলত রুটিন কাজের বাইরে নতুন কোনও উদ্যোগ নিতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন এখনও তাদের এশিয়া নীতি তৈরি করেনি। চীন বা ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশে এখনও দেশটির রাষ্ট্র্রদূত নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও এখনও অনেক পদে নিয়োগ না দেওয়ায় শূন্যতা তৈরি হয়েছে।’
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ট্রাম্পের এশিয়া নীতি কী হবে এবং সেই নীতি পরিচালনার জন্য কাদের নিয়োগ দেওয়া হবে সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।’ তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ দক্ষিণ এশিয়া নীতির একটি অংশ বাংলাদেশ। যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই নীতি সবার কাছে পরিষ্কার হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে নতুন উদ্যোগের জন্য।’
এ বিষয়ে আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক মোহাম্মাদ জমির বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিকল্পনা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প কিছুদিন আগে সৌদি আরব সফর করেছেন এবং তার মধ্যপ্রাচ্য নীতির বিষয়ে লোকজন এখন অনেক কিছু জানে।’ জমির বলেন, ‘আগামী কিছুদিনের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা আছে। এই সফর হলে ওয়াশিংটন হয়তো তার বৃহৎ দক্ষিণ এশিয়া নীতি তৈরি ও বাস্তবায়ন শুরু করবে।’
বর্ষীয়ান এই কূটনীতিকের মতে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা কোনও দেশ নয়। এ কারণে মার্কিন নীতি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত কয়েক মাসে রুটিন কাজের বাইরে দুই দেশ টিকফা বৈঠক করেছে। সেখানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সম্পর্কের নতুন উদ্যোগ নেওয়াটা কঠিন বলে মন্তব্য করেন তিনি।