চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশবাসী যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বুনে যাচ্ছে, সেই স্বপ্নের পরিধি বাড়িয়ে দিতেই গত বছর বিজয় দিবসে আয়োজন করা হয় ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ কনসার্টের। যেখানে বরেণ্য ও তরুণ শিল্পী থেকে শুরু করে শীর্ষ ব্যান্ডগুলো পারফর্ম করেছিল। এই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজন করছে আরও চারটি বর্ণাঢ্য কনসার্টের। ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস হলেও রোজার কারণে উদযাপন তারিখ পিছিয়ে ১১ এপ্রিল করা হয়েছে বলে আয়োজকরা জানায়। আরও বলেন, বিজয় দিবস উদযাপনের কনসার্টটি শুধু ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তবে স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে কিছুটা ব্যতিক্রম হচ্ছে। এইবার সুরের উৎসবটি আরও বড় পরিসরে করা হচ্ছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ায় একযোগে অনুষ্ঠিত হবে কনসার্টটি; যার মধ্যে রাজধানী ঢাকায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আয়োজিত কনসার্টে পারফর্ম করবেন নগর বাউল তারকা জেমসসহ কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, আগুন, সেলিম চৌধুরী, মিলা, হায়দার হোসেন, মাহতিম সাকিব, জেফার, পড়শী, অনিমেষ রায়, সোহান আলী, আবরার শাহরিয়ার, আলেয়া বেগম, মিফতা জামান, ব্যান্ড ফিডব্যাক, শিরোনামহীন, পাওয়ারসার্জ, আফটার ম্যাথ ও আপেক্ষিক।
একই সময়ে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে গান শোনাবে ব্যান্ড সোলস, মাইলস, আর্ক, লালন, অ্যাশজে, সাবকনসাস, বে অব বেঙ্গল, তীরন্দাজ, মেট্রিক্যালসহ কণ্ঠশিল্পী ইমরান, সালমা, কিরণ দাস, কোনাল, চিশতি বাউল, তাসনিম আনিকা, ইথুন বাবু, ঋতুরাজ, আকলিমা মুক্তা, পরাণ আহসান, রায়হান, শুভ্র ও মৌসুমী।
আরেকদিকে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে গানে গানে স্বাধীনতা দিবসের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দিতে একে একে মঞ্চে উঠবে ব্যান্ড ওয়ারফেজ, আর্বোভাইরাস, বাংলা ফাইভ, সোনার বাংলা সার্কাস, কার্নিভাল, কাগুল, কুঁড়েঘর, বিবর্তনের সদস্যদের পাশাপাশি কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর, মনির খান, বালাম, তাহসান খান, কনা, নাসির, পলাশ, জয় শাহরিয়ার, লিজা, রুখসার রহমান ও টুনটুন বাউল। স্বাধীনতা দিবসের চতুর্থ কনসার্টটি হবে বগুড়ায়। এই জেলা শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে আয়োজিত কনসার্টে গাইবেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, কনকচাঁপা, খুরশীদ আলম, হৃদয় খান, মিজান, কর্নিয়া, আলম আরা মিনু, লুইয়া, কে ডেজ রাব্বী, মুত্তাকী হাসিব, মুহিন এবং ব্যান্ড আর্টসেল, ডিফারেন্ট টাচ, ভাইকিংস, অ্যাভয়েড রাফা, এমএনবি ও বাগধারা।
আয়োজকরা বলেন, ১১ এপ্রিল চারটি শহরে একই সময় শুরু হবে কনসার্ট। বেলা ৩টায় শুরু হয়ে এ আয়োজন চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত। এতে তারকা ও তরুণ শিল্পী এবং জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলোর পরিবেশন যেমন থাকছে, তেমনি দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরতে থাকছে স্থানীয় লোকগানের পরিবেশনা।
এই আয়োজন নিয়ে সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডশেনের কোষাধ্যক্ষ সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে আমাদের এ আয়োজন। বিগত সরকারের আমলে দেশীয় শিল্পীদের উপেক্ষা করে ভারতীয় শিল্পীদের নিয়ে একের পর এক আয়োজন করা হয়েছে। সরকার বদলে গেলেও সংগীত এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে আয়োজকদের চিন্তাধারায় খুব একটা পরিবর্তন দেখা যায়নি। আগে যেখানে ভারতীয়দের প্রাধান্য ছিল, এখন সেখানে পাকিস্তানি শিল্পীরা জায়গা করে নিচ্ছেন। অথচ আমাদের শিকড় সংস্কৃতি কতটা সমৃদ্ধ, তা জানানোর তাগিদ অনুভব করছেন না অনেকেই। আমাদের সংস্কৃতি একদিকে যেমন সমৃদ্ধ, তেমনি আমাদের গুণী শিল্পীর অভাব নেই। যাদের অনেকেই পৃথিবীর নানা প্রান্তে গিয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। সেসব শিল্পী ও সংগীতায়োজকের সৃষ্টি আমরা তুল ধরতে চাই। একই সঙ্গে চাই, সুরেলা এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সবার মাঝে দেশপ্রেম ছড়িয়ে দিতে।’
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস