ইউরোপ

জার্মানিতে আয়লানের গ্রাফিটি নষ্ট করল বর্ণবাদীরা

ছোট্ট আয়লানের কথা মনে আছে? তুরস্কের উপকূলে যার মরদেহের ছবি পুরো বিশ্বকে কাঁদিয়েছিল? সেই আয়লানের বিশাল একটি গ্রাফিটি আঁকা হয়েছিল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে, মাইন নদীর ধারে৷ সেই গ্রাফিটি নষ্ট করে দিয়েছে কট্টরপন্থিরা৷শরণার্থী ইস্যুতে সচেতনতা তৈরি করতেই এই গ্রাফিটি তৈরি করা হয়েছিল৷ ধারণা করা হচ্ছে ডানপন্থিরা এটি নষ্ট করেছে৷গত বছর পরিবারের সঙ্গে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের সময় নৌকা ডুবে মারা যায় আয়লান৷ সাগর পাড়ে নিথর পড়ে থাকা ছোট্ট এক শিশুর মরদেহের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠেছিল, শরনার্থী ইস্যুতে ইউরোপের দৃষ্টভঙ্গির সমালোচনা হয়েছিল ব্যাপক৷মাইন নদীর ধারে একটি দেয়ালে আয়লানের ছবি আঁকাএ বছরের মার্চ মাসে জার্মান শিল্পী ওগুস শেন এবং ইয়ুসটুস বেকার সিদ্ধান্ত নেন ফ্রাঙ্কফুর্টে আয়লানের একটি ম্যুরাল বানাবেন৷ ডয়চে ভেলেকে তারা জানান, ‘‘আমরা সাধারণত রাজনৈতিক ছবি এঁকে থাকি৷ তাই সিদ্ধান্ত নিলাম মানুষের স্মৃতিতে আয়লান যাতে অম্লান থাকে সে জন্য আয়লানের ছবিই আঁকব৷'' অনেক আলোচনার পর মাইন নদীর ধারে একটি দেয়ালে আয়লানের ছবি আঁকার অনুমতি পান তারা৷ তারপরই দুই শিল্পীর পয়াসে ধীরে ধীরে দেয়ালে ফুটে ওঠে ২০ মিটার দীর্ঘ এবং ৬ মিটার প্রশস্থ গ্রাফিটি৷কিন্তু দুঃখের কথা হলো, ছবিটা চরমপন্থিরা এটা নষ্ট করে দিয়েছে৷ প্রথমে পুরোম্যুরালটি স্প্রে দিয়ে নষ্ট করার চেষ্টা চালায় তারা৷ কিন্তু ম্যুরালটি এতই বড় যে এতে কোনো কাজ হয়নি৷ কিন্তু কট্টরপন্থিরা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কাজটি করেছে এই সপ্তাহে৷ গ্রাফিটির উপর স্প্রে দিয়ে বড় বড় করে লিখেছে, ‘‘সীমান্ত প্রাণ রক্ষা করে৷'' এর পেছনে জড়িতদের খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে ফ্রাঙ্কফুর্ট পুলিশ৷এদিকে এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য লিখছেন অনেকেই৷ রবার্ট ফিৎসকে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘বর্ণবাদীরা একজন মৃত মানুষকেও ছাড় দেয় না৷ এটা ভীষণ লজ্জার৷''তবে এমন মানুষেরও অভাব নেই, যারা লিখেছে, ‘‘অবশেষে কেউ একজন এই প্রচারে বাধা দিল৷''তবে আয়লানের ম্যুরাল সৃষ্টিকারী শিল্পীরা হতাশ হলেও তারা আবার অর্থ যোগাড়ে নেমে পড়েছেন, যাতে নতুন করে এই শিল্পকর্মটি তৈরি করতে পারেন৷ নতুন করে এটি তৈরিতে ৫০০ ইউরো প্রয়োজন৷ আয়লানের স্মৃতি ধরে রাখতে এই সামান্য অর্থ কি যোগাড় হবে না!