স্বাস্থ্য

বেশি ঘুমে বেশি ক্ষতি

সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচার জন্য পরিমিত ঘুম অতি প্রয়োজনীয়। ঘুম কম হলে তা আমাদের সারাদিনের কাজের ওপর খুব বাজেভাবে প্রভাব ফেলে। তবে অতিরিক্ত ঘুমও আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কেমন সেই ক্ষতির ধরন? চলুন জেনে নেয়া যাক-

আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি ২০১২ সালে এক গবেষণা চালায়। সেখানে বলা হয়, আট ঘণ্টার বেশি সময় নিয়মিত ঘুমালে হৃদযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত ঘুমান এমন তিন হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, অন্যদের অপেক্ষা দ্বিগুণ পরিমাণ এনজিনা এবং দেড়গুণ করোনারি আর্টেরি রোগের ঝুঁকিতে ভোগেন তাঁরা।

কোরিয়ায় ২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখানো হয়, অতিরিক্ত ঘুমের কারণে নারীদের গর্ভধারণের ক্ষমতা হ্রাস পায়। প্রায় ৬৫০ জন নারীর ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। খ্যাতিমান অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট ড. ইভান রোজেনব্লাথ বলেন, ঘুমের সঙ্গে দেহের ২৪ ঘণ্টার জৈবিক চক্র, হরমোন ক্ষরণ এবং ঋতুস্রাবের বিষয়টি জড়িত। এসব আবার গর্ভধারণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।

কানাডার কুইবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, রাতে আট ঘণ্টার বেশি ঘুমের কারণে রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারায় দেহ। এতে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের শঙ্কা বেড়ে যায়।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক গবেষণায় বলা হয়, খুব কম বা বেশি ঘুমের কারণে দেহের ওজন অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। এসব মানুষের ওজন বৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ বেশি থাকে। অতিরিক্ত ঘুমের কারণে স্থূলতা দেখা দিতে পারে।

২০১৪ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, বেশি সময় ধরে ঘুমানোর ফলে মানুষের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ প্রকাশ পায়। পরীক্ষায় দেখা যায়, যারা ৯ ঘণ্টা ও তার বেশি সময় ঘুমান, তাদের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ ৪৯ শতাংশ বেড়ে যায়।

২০১২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, খুব কম বা খুব বেশি সময়ের ঘুম মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস করে। নারীরা পাঁচ ঘণ্টার কম অথবা ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নিয়মিত ঘুমালে দুই বছরের জন্য তাদের মগজের কর্মক্ষতা কমে যেতে পারে।

২০১০ সালে ১৬টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা নিয়ে একটি রিভিউ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, যারা বেশি ঘুমান তাদের দ্রুত মৃত্যুর শঙ্কা অন্যদের চেয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি থাকে। ওই গবেষণাগুলো ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৯ জন মানুষের ওপর পরিচালিত হয়।