স্বাস্থ্য

নবীজির প্রিয় ১২ খাবার ও তার গুণাবলী

হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)-এর পছন্দের ১২টি প্রিয় খাবার ছিল। এসব খাবার তিনি প্রতিনিয়তই আহার করতেন। নবীজী (সা.) এর পছন্দের খাবারের গুলো হল বার্লি, খেজুর, ডুমুর, আঙ্গুর, মধু, তরমুজ, দুধ, মাশরুম, অলিভ অয়েল, ডালিম-বেদানা, ভিনেগার ও পানি। এসব খাবারের গুণাবলী এখানে উল্লেখ করা হলো।
বার্লি (জাউ): এটা জ্বরের জন্য এবং পেটের পীড়ায় উপকারী। অসুস্থ অবস্থায়, মূলত জ্বর হলে রাসুল (সা.) এই খাবারটি বেশি গ্রহণ করতেন বলে জানা যায়।
খেজুর: খেজুর রাসুলের (সা.) খুব প্রিয় একটি খাবার। প্রিয়নবী (সা.) বলতেন, যে বাড়িতে খেজুর নেই সে বাড়িতে কোনো খাবার নেই। এমনকি প্রিয়নবী (সা.) সন্তান প্রসবের পর প্রসূতি মাকে খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। খেজুরের গুণাগুণ ও খাদ্যশক্তি অপরিসীম। খেজুরের খাদ্যশক্তি ও খনিজ লবণের উপাদান শরীল সতেজ রাখে।
ডুমুর: ডুমুরও রাসুলের (সা.) প্রিয় খাবারের মধ্যে অন্যতম। ডুমুর অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ভেষজগুণসম্পন্ন যাদের পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী খাবার।
আঙ্গুর: প্রিয়নবী (সা.) আঙ্গুর খেতে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তার প্রিয় খাবারের তালিকায় আঙ্গুর অন্যতম। আঙ্গুরের পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। এই খাবারের উচ্চ খাদ্যশক্তির কারণে এটা থেকে আমরা তাৎক্ষণিক এনার্জি পাই এবং এটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আঙ্গুর কিডনির জন্য উপকারী এবং বাওয়েল মুভমেন্টে সহায়ক। যাদের আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম আছে তারা খেতে পারেন।
মধু: মধু ছিল রাসুলের (সা.) অত্যন্ত প্রিয় একটি খাদ্য। বিভিন্ন সময় তিনি মধু খেতেন। মধুর নানা পুষ্টিগুণ ও ভেষজ গুণ রয়েছে। মধুকে বলা হয় খাবার, পানীয় ও ওষুধের সেরা। হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে মধু পান করা ডায়রিয়ার জন্য ভালো। খাবারে অরুচি, পাকস্থলীর সমস্যা, হেয়ার কন্ডিশনার ও মাউথওয়াশ হিসেবে উপকারী।
তরমুজ: প্রিয়নবী (সা.) তরমুজ আহারকে গুরুত্ব দিতেন। নিজেও বেশ পরিমাণে তরমুজ খেতেন। সব ধরনের তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যেসব গর্ভবর্তী মা তরমুজ আহার করেন তাদের সন্তান প্রসব সহজ হয়।
দুধ: দুধ রাসুলের (সা.) অত্যন্ত প্রিয় ছিল। দুধকে জান্নাতি খাবার বলা হয়। দুধের খাদ্যগুণ, পুষ্টিগুণ ও ভেষজগুণ বর্ণনাতীত। দুধ পানে মেরুদণ্ড সবল হয়, মস্তিষ্ক সুগঠিত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়। আজকের বিজ্ঞানীরাও দুধকে আদর্শ খাবার হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং এর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি অস্থিগঠনে সহায়ক।
মাশরুম: প্রিয়নবী (সা.) জানতেন মাশরুম চোখের জন্য ভালো। এটা বার্থ কন্ট্রোলে সহায়ক ও মাশরুমের ভেষজগুণের কারণে এটা নার্ভ শক্ত করে এবং শরীরের প্যারালাইসিস বা অকেজো হওয়ার প্রক্রিয়া রোধ করে। আজ বিশ্ব জুড়ে মাশরুম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং মাশরুম নিয়ে চলছে নানা গবেষণা।
জলপাই তেল: অলিভ অয়েলের খাদ্য ও পুষ্টিগুণ অনেক। গবেষণায় দেখা গেছে অলিভ অয়েল ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী এবং বয়স ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক বা বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে। এছাড়া অলিভ অয়েল পাকস্থলীর প্রদাহ নিরাময়ে সহায়ক।
ডালিম-বেদানা: প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, ডালিম-বেদানা আহারকারীদের শয়তানও মন্দ চিন্তা থেকে বিরত রাখে। বেদানার পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণের পাশাপাশি এটার ধর্মীয় একটি দিক আছে।
ভিনেগার: ভিনেগারের ভেষজ গুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। প্রিয়নবী (সা.) অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ভিনেগার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
খাবার পানি: প্রিয়নবী (সা.) পানিকে পৃথিবীর সেরা ড্রিংক বা পানীয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পানির অপর নাম জীবন। পানির ভেষজগুণ অপরিসীম। সৌন্দর্য চর্চা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যরক্ষায় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আজ প্রচুর পানি পান করতে বলেন।