আন্তর্জাতিক

কাবুলে বোমা হামলা: নিহত ৫৮

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮। রোববার আফগান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর জানানো হয়।

এর আগে শনিবার কাবুলের শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত দাশতে বারচি মহল্লায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় অন্তত এক শ' ৫০ জন আহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মাত্র সাত-আটজন বাদে হতাহতদের সকলেই স্কুলছাত্রী, যারা ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরছিল।

বিস্ফোরণস্থল থেকে রোববারেও উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। কিছু পরিবার তাদের নিখোঁজ স্বজনের সন্ধানে হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজ নিচ্ছে।

হামলার জন্য এখনো কোনো গোষ্ঠীই দায়িত্ব স্বীকার করেনি।

এদিকে হামলার ঘটনায় আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে তালেবানকে দায়ী করে এক বিবৃতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'তালেবান তাদের অবৈধ যুদ্ধ ও সহিংসতা বাড়াতে আরেকবার দেখিয়ে দিল তারা শান্তিপূর্ণ ও ভিত্তিগতভাবে বর্তমান সংকটের সমাধান করতেই অনাগ্রহী নয়, বরং পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে।'

আফগান সশস্ত্র সংগঠন তালেবান এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং এর সাথে তাদের দায়িত্বকে অস্বীকার করেছে।

আলজাজিরার সংবাদদাতা কাবুল থেকে জানান, হামলার পর পুরো কাবুল শহর স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় স্কুল থেকে ছাত্রীদের ফেরার সময় ওই মহল্লায় পরপর তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। আতঙ্কিত ছাত্রীরা এই সময় ছোটাছুটি শুরু করে।

হামলার ঘটনায় আফগানিস্তানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশন এক টুইট বার্তায় নিন্দা জানিয়েছে। টুইট বার্তায় হামলার ঘটনাকে 'জঘন্য সন্ত্রাসমূলক কাজ' বলে উল্লেখ করা হয়।

অপরদিকে আফগানিস্তানে জাতিসঙ্ঘের সহায়তা মিশনের (ইউএনএএমএ) এক বিবৃতিতে হামলার ঘটনায় তাদের 'চরম ঘৃণা' জানানো হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যহার করার কথা ঘোষণা করার পর থেকে কাবুলে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। আফগান কর্মকর্তারা দাবি করছেন, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণায় তালেবান সারা দেশে তাদের আক্রমণ জোরদার করেছে।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার জেরে ওই বছর ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন আগ্রাসন চালায়। ২০ ডিসেম্বর জাতিসঙ্ঘ আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক নিরপত্তা সহায়ক বাহিনীর অবস্থানের অনুমোদন করলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের অংশীদার ৪৩টি দেশের সৈন্য দেশটিতে অবস্থান নেয়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ আলোচনার পর কাতারের রাজধানী দোহাতে এক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির অধীনে তালেবান সহিংসতা ছেড়ে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণে সম্মত হয়। বিনিময়ে দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল বিদেশী বাহিনীকে এই বছর ১ মে সময়সীমায় প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

তবে গত ১৪ এপ্রিল হোয়াইট হাউজে এক ঘোষণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন করে এই সময়সীমা ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ান। বাইডেনের ঘোষণা অনুসারে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য ৩৫টি দেশের নয় হাজার পাঁচ শ' ৯২ সৈন্য প্রত্যাহারের কথা রয়েছে।   এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/আই