শেঙেনভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াতের জন্য ভিসা লাগে না। সীমান্তে থাকে না চেকপোস্ট। কিন্তু সম্প্রতি পোলিশ-জার্মান সীমান্তে সতর্কতা অনেক বেড়েছে। জার্মানি ও লিথুয়ানিয়ার সঙ্গে সীমান্তেও চেকপোস্ট বসিয়েছে পোল্যান্ড।
সীমান্ত পার করে দেশে ঢুকতে গেলে সবাইকে বৈধ কাগজ দেখাতে হবে।
পোল্যান্ড অবশ্য জানিয়েছে, এটি কোনো স্থায়ী বন্দোবস্ত নয়, আপাতত অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বস্তুত অতীতেও বেশ কিছু দেশ অস্থায়ীভাবে এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক জানিয়েছেন, মানবপাচার ও অনুপ্রবেশ রুখতেই অস্থায়ীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বস্তুত পোল্যান্ড এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে জার্মানি প্রথম পোল্যান্ড সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ শুরু করে। সীমান্ত পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়। মনে করা হচ্ছে, তার উত্তরেই পোল্যান্ড এই নীতি নিয়েছে।
এদিকে ব্রাসেলস মনে করছে, ইটের জবাব পাটকেলে দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোল্যান্ড। আর এর থেকেই মুক্ত সীমান্তের বিষয়টি আদৌ আর থাকবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রশ্ন।
আরো পড়ুন
সীমান্তহীন ইউরোপের স্বপ্ন—শেঙেন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে?
সীমান্তহীন ইউরোপের স্বপ্ন—শেঙেন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে?
শেঙেন কী
২৯টি ইউরোপীয় দেশে পাসপোর্ট ছাড়া যাতায়াত করার ব্যবস্থাকেই শেঙেন বলা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো এর অংশ তো বটেই, পাশাপাশি নরওয়ে, সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলোও এতে যোগ দিয়েছে। এর ফলে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন মানুষ ভিসা ছাড়া এই দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াত করতে পারে। শুধু মানুষ নয়, ব্যবসার ক্ষেত্রেও এই নীতি সমভাবে প্রযোজ্য।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, ১৯৯০ সালে তৈরি হওয়া এই ব্যবস্থা ক্রমে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। বস্তুত সে কারণেই এর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই প্রথম নয়
২০১৫ সালে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ফ্রান্স সীমান্তে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বাড়িয়েছিল। ২০১৫ সালেই স্লোভেনিয়া ও হাঙ্গেরি সীমান্তে সতর্কতা বাড়িয়েছিল অস্ট্রিয়া। অনুপ্রবেশ রোধ করতেই অস্ট্রিয়া এই ব্যবস্থা নিয়েছিল। প্রত্যেক ছয় মাসে ওই দুই দেশের সঙ্গে অস্ট্রিয়া এই নীতির পুনর্নবীকরণ করে। আবার এই একই কাজ স্লোভেনিয়া শুরু করেছে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে। সেখানেও অনুপ্রবেশের বিষয়টিকেই সামনে রাখা হয়েছে। মজার বিষয় হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম অনুযায়ী কোনো দেশ এমন কাজ দীর্ঘদিন ধরে করতে পারে না। অস্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা নিলেও তার ব্যাখ্যা দিতে হয় ইইউকে। কিন্তু বিভিন্ন দেশের নেওয়া এই কোনো সিদ্ধান্তকেই ইইউ এখন পর্যন্ত প্রশ্ন করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশগুলোও অস্থায়ী ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, এই পদক্ষেপগুলো যতটা না অনুপ্রবেশ আটকানোর জন্য, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণের জন্য। ইউরোপজুড়ে অতি দক্ষিণপন্থার উত্থান যত দ্রুত ঘটছে, তত বেশি এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মধ্যপন্থীরা অনুপ্রবেশ রুখতে পারছেন না। আর সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে দক্ষিণপন্থীরা এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের সমর্থন পাচ্ছে। আদৌ কোনো লাভ হচ্ছে
তথ্য বলছে, যে ধরনের সুরক্ষাব্যবস্থা সীমান্তে গ্রহণ করা হচ্ছে, তাতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। জার্মানি জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে পোল্যান্ড সীমান্তে ১৬০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটকানো হয়েছে। অন্যদিকে পোল্যান্ডের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে জার্মানি পোল্যান্ডে এক হাজার অনুপ্রবেশকারীকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এই সংখ্যাগুলো আগের সংখ্যার চেয়ে খুব আলাদা নয়। অর্থাৎ সীমান্তে সতর্কতা বাড়ানোর আগেও একই সংখ্যা ছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অনুপ্রবেশ, মানবপাচারের মতো বিষয়গুলো সামনে রাখলেও এই কাজের পেছনে আসল উদ্দেশ্য রাজনৈতিক। এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
পোল্যান্ড অবশ্য জানিয়েছে, এটি কোনো স্থায়ী বন্দোবস্ত নয়, আপাতত অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বস্তুত অতীতেও বেশ কিছু দেশ অস্থায়ীভাবে এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক জানিয়েছেন, মানবপাচার ও অনুপ্রবেশ রুখতেই অস্থায়ীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বস্তুত পোল্যান্ড এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে জার্মানি প্রথম পোল্যান্ড সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ শুরু করে। সীমান্ত পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়। মনে করা হচ্ছে, তার উত্তরেই পোল্যান্ড এই নীতি নিয়েছে।
এদিকে ব্রাসেলস মনে করছে, ইটের জবাব পাটকেলে দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোল্যান্ড। আর এর থেকেই মুক্ত সীমান্তের বিষয়টি আদৌ আর থাকবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রশ্ন।
আরো পড়ুন
সীমান্তহীন ইউরোপের স্বপ্ন—শেঙেন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে?
সীমান্তহীন ইউরোপের স্বপ্ন—শেঙেন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে?
শেঙেন কী
২৯টি ইউরোপীয় দেশে পাসপোর্ট ছাড়া যাতায়াত করার ব্যবস্থাকেই শেঙেন বলা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো এর অংশ তো বটেই, পাশাপাশি নরওয়ে, সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলোও এতে যোগ দিয়েছে। এর ফলে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন মানুষ ভিসা ছাড়া এই দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াত করতে পারে। শুধু মানুষ নয়, ব্যবসার ক্ষেত্রেও এই নীতি সমভাবে প্রযোজ্য।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, ১৯৯০ সালে তৈরি হওয়া এই ব্যবস্থা ক্রমে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। বস্তুত সে কারণেই এর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই প্রথম নয়
২০১৫ সালে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ফ্রান্স সীমান্তে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বাড়িয়েছিল। ২০১৫ সালেই স্লোভেনিয়া ও হাঙ্গেরি সীমান্তে সতর্কতা বাড়িয়েছিল অস্ট্রিয়া। অনুপ্রবেশ রোধ করতেই অস্ট্রিয়া এই ব্যবস্থা নিয়েছিল। প্রত্যেক ছয় মাসে ওই দুই দেশের সঙ্গে অস্ট্রিয়া এই নীতির পুনর্নবীকরণ করে। আবার এই একই কাজ স্লোভেনিয়া শুরু করেছে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে। সেখানেও অনুপ্রবেশের বিষয়টিকেই সামনে রাখা হয়েছে। মজার বিষয় হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম অনুযায়ী কোনো দেশ এমন কাজ দীর্ঘদিন ধরে করতে পারে না। অস্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা নিলেও তার ব্যাখ্যা দিতে হয় ইইউকে। কিন্তু বিভিন্ন দেশের নেওয়া এই কোনো সিদ্ধান্তকেই ইইউ এখন পর্যন্ত প্রশ্ন করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশগুলোও অস্থায়ী ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, এই পদক্ষেপগুলো যতটা না অনুপ্রবেশ আটকানোর জন্য, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণের জন্য। ইউরোপজুড়ে অতি দক্ষিণপন্থার উত্থান যত দ্রুত ঘটছে, তত বেশি এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মধ্যপন্থীরা অনুপ্রবেশ রুখতে পারছেন না। আর সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে দক্ষিণপন্থীরা এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের সমর্থন পাচ্ছে। আদৌ কোনো লাভ হচ্ছে
তথ্য বলছে, যে ধরনের সুরক্ষাব্যবস্থা সীমান্তে গ্রহণ করা হচ্ছে, তাতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। জার্মানি জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে পোল্যান্ড সীমান্তে ১৬০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটকানো হয়েছে। অন্যদিকে পোল্যান্ডের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে জার্মানি পোল্যান্ডে এক হাজার অনুপ্রবেশকারীকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এই সংখ্যাগুলো আগের সংখ্যার চেয়ে খুব আলাদা নয়। অর্থাৎ সীমান্তে সতর্কতা বাড়ানোর আগেও একই সংখ্যা ছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অনুপ্রবেশ, মানবপাচারের মতো বিষয়গুলো সামনে রাখলেও এই কাজের পেছনে আসল উদ্দেশ্য রাজনৈতিক। এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস