লস এঞ্জেলেস

অভিবাসী সহায়তা উদ্যোগ স্থগিত করল ডজার্স

লস এঞ্জেলেসের অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য সহায়তা পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছিলো লস এঞ্জেলেস ডজার্স। তবে বৃহস্পতিবার ডজার স্টেডিয়ামের আশপাশে ফেডারেল অভিবাসন এজেন্টদের অবস্থান গ্রহণের পর সেই ঘোষণা বিলম্বিত করা হয়েছে। ডজার্স প্রেসিডেন্ট স্ট্যান ক্যাস্টেন এক বিবৃতিতে বলেন, “বৃহস্পতিবার সকালে যা ঘটেছে, তার প্রেক্ষিতে আমরা অংশীদার সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে পরিকল্পনার কিছু দিক আরও নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঘোষণা কিছুটা পিছিয়ে দিতে হচ্ছে। খুব শিগগিরই আমরা নতুন তারিখ জানাব।” ডজার স্টেডিয়ামে কী ঘটেছিল? বৃহস্পতিবার সকালবেলা বেশ কয়েকজন ফেডারেল এজেন্ট—ট্যাকটিক্যাল গিয়ার পরিহিত, মুখ ঢেকে রাখা অবস্থায়—SUV ও কার্গো ভ্যানে করে ডজার স্টেডিয়ামের গেট ই-এর আশপাশে জড়ো হন। পরে তারা এলাকা জুড়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন। স্থানীয় কাউন্সিল সদস্যরা জানান, লস এঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ১-এর কর্মীরা ঘটনাটি LAPD-কে জানালে, পুলিশ ডজার্স কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। ডজার্স পরে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ জানায়, “আজ সকালে ICE এজেন্টরা ডজার স্টেডিয়ামে এসে পার্কিং লটে প্রবেশের অনুরোধ করেছিল। ডজার্স কর্তৃপক্ষ তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি। আজ রাতের খেলা পূর্বনির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।” সরকারি প্রতিক্রিয়া ও বিরোধপূর্ণ তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS) এক বিবৃতিতে জানায়, “এই ঘটনার ডজার্সের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। CBP (Customs and Border Protection) গাড়িগুলি খুব অল্প সময়ের জন্য স্টেডিয়ামের পার্কিং লটে ছিল, যা কোনো অভিযান বা আইন প্রয়োগের অংশ ছিল না।” ICE (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট)-ও ডজার্সের পোস্টকে “মিথ্যা” বলে আখ্যা দিয়ে দাবি করে, “আমরা সেখানে কখনোই ছিলাম না।” তবে বেলা ১১টার কিছু পরেও কিছু ফেডারেল এজেন্ট ওই এলাকায় অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় কাউন্সিল সদস্য ও প্রতিবাদ সকাল ১০টার কিছু পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাউন্সিল সদস্য ইউনিসেস হার্নান্দেজ বলেন, “আমরা মেয়রের অফিস, ডজার্স কর্তৃপক্ষ এবং নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করছি যেন তারা তাদের নিজস্ব প্রাইভেট প্রপার্টি থেকে এজেন্টদের সরিয়ে দিতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “পাবলিক প্রপার্টির চেয়ে প্রাইভেট প্রপার্টিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন নিজেদের মত করে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।” এই ঘটনায় কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী জড়ো হয়, ফলে LAPD ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিরাপত্তা বলয় গঠন করে যাতে সংঘর্ষ না ঘটে। দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। দুপুর ১:৩০টার দিকে LAPD এবং বিক্ষোভকারীরা এলাকা ত্যাগ করে। সমালোচনার মুখে ডজার্স ও খেলোয়াড়ের প্রতিক্রিয়া বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনার আগে ডজার্স দলটি অভিবাসন অভিযান নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য না করায় সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়ে। ডজার্স ইনফিল্ডার কিকে হার্নান্দেজ গত শনিবার ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “আমার শহর ও দেশে যা ঘটছে, তাতে আমি গভীরভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। আমাদের কমিউনিটিকে এভাবে নিপীড়িত, প্রোফাইলড, নির্যাতিত ও বিভক্ত হতে দেখে আমি চুপ থাকতে পারি না। প্রত্যেক মানুষই সম্মান, মর্যাদা এবং মানবাধিকার পাওয়ার যোগ্য।” ডজার্স কবে তাদের সহায়তা পরিকল্পনার ঘোষণা দেবে, তা এখনো নির্ধারিত নয়, তবে পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে।

এলএবাংলাটাইমস/ওএম