লস এঞ্জেলেসের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল শুক্রবার হাজারো বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। প্রচণ্ড গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া এ দাবানলের দ্রুত বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে।
ক্যানিয়ন ফায়ার নামে পরিচিত এই আগুনটি বৃহস্পতিবার বিকেলে ভেনচুরা ও লস এঞ্জেলেস কাউন্টির সীমানায় শুরু হয়। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে আগুনের বিস্তার ৩০ একর থেকে প্রায় ৫,৪০০ একরে পৌঁছে যায়। শনিবার সকালে কর্মকর্তারা জানান, আগুনের ২৮% এলাকা নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং কিছু এলাকায় বাধ্যতামূলক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ কমিয়ে সতর্কবার্তায় রূপান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এক দমকলকর্মী গুরুতর আহত হন যখন তার ট্রাক একটি পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নিচে পড়ে যায়। কার্ন কাউন্টি ফায়ারফাইটার জেমস এজি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে দুর্ঘটনায় পড়েন। তাকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কার্ন কাউন্টি ফায়ার চিফ অ্যারন ডানকান বলেন, “জেমস একজন দৃঢ়চেতা ও সাহসী মানুষ। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি এই চ্যালেঞ্জকেও শক্তি ও চরিত্র দিয়ে মোকাবিলা করবেন।”
যদিও চরম গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া দমকলকর্মীদের কাজে বাধা দিচ্ছিল, শুক্রবার রাতে ভেনচুরা কাউন্টি জানায়, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি হয়েছে। শনিবার সকালে ১,১৪৮ জন দমকলকর্মী আগুন নেভাতে কাজ করছেন। এলএ কাউন্টি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, “রাতভর ফায়ারফাইটাররা প্রতিরক্ষা অবস্থান শক্তিশালী করেছেন এবং নিয়ন্ত্রণ লাইন আরও মজবুত করেছেন।”
আগুন এখনো সক্রিয় এবং পূর্ব দিকে লস এঞ্জেলেস কাউন্টির কাস্টেইক অঞ্চলের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। তাপমাত্রা আগামী কয়েক দিনে ১০০°F (৩৭.৭°C)-এ পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস থাকায় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। সান্তা ক্লারিটা শহরের অধিবাসীদের আগুনপ্রবণ এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার অগ্নি নির্বাপন বিভাগ (Cal Fire) জানিয়েছে, রাজ্যে একাধিক দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গিফোর্ড ফায়ার সান লুইস ওবিস্পো ও সান্তা বারবারা কাউন্টিতে প্রায় ১,০০,০০০ একর এলাকা জুড়ে জ্বলছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলের হার বেড়েছে। উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া অগ্নিকাণ্ডের মৌসুমকে দীর্ঘায়িত এবং ধ্বংসাত্মক করে তুলছে। এ বছরের জানুয়ারিতে ইটন ফায়ার ও প্যালিসেডস ফায়ার লস এঞ্জেলেসের দুটি এলাকা পুড়িয়ে দেয়, যেখানে অন্তত ৩১ জন নিহত এবং হাজারো ভবন ধ্বংস হয়।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম