লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি আবারও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতে জড়াতে চলেছে। গৃহহীনদের তহবিল কমানো, স্বাস্থ্য অনুদান বাতিল এবং শহরে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের মতো বিষয় নিয়ে আগেই উত্তেজনা দেখা গেছে। এবার নতুন ইস্যু হলো মুখোশধারী ইমিগ্রেশন এজেন্টদের অভিযান বন্ধ করতে কাউন্টি বোর্ড অব সুপারভাইজর্সের উদ্যোগ। মঙ্গলবার বোর্ড ৪–০ ভোটে একটি নতুন আইনের প্রস্তাব অনুমোদন করে, যেখানে বলা হয়েছে—কাউন্টির অননুমোদিত এলাকায় অভিযান চালানোর সময় ফেডারেল ইমিগ্রেশন এজেন্টরা মুখোশ পরতে পারবেন না এবং সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে স্পষ্টভাবে নিজের পরিচয় প্রদর্শন করতে হবে। প্রস্তাবটি উত্থাপনকারী সুপারভাইজর জেনিস হান বলেন, “কাকে গ্রেপ্তার করছে তা জানাটা মানুষের মৌলিক অধিকার,” এবং তিনি এজেন্টদের ‘মুখোশ খুলতে’ আহ্বান জানান।
তবে ফেডারেল সরকার নতুন নিয়ম মানতে আগ্রহী না—এমন ইঙ্গিত স্পষ্ট। বোর্ডের ভোটের পরদিনই U.S. Border Patrol লা পুয়েন্টে এলাকায় একটি ফুড স্ট্যান্ডে অভিযান চালায়। এজেন্টরা মুখোশ পরা অবস্থায় চিহ্নবিহীন ভ্যানে করে এসে তিনজন কর্মীকে আটক করে, আর একজন আতঙ্কে পাশের একটি ফায়ারট্রাকে আশ্রয় নেন। এই অভিযান বোর্ড যে আচরণ বন্ধ করতে বলছে তারই পুনরাবৃত্তি। প্রস্তাবটি আগামী সপ্তাহে বোর্ডে চূড়ান্ত ভোটে উঠবে এবং পাস হলে জানুয়ারির শুরুতে কার্যকর হবে। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন—সংবিধানের সুপ্রীমেসি ক্লজ অনুযায়ী ফেডারেল আইন স্থানীয় আইনের ওপর প্রাধান্য পায়, তাই ফেডারেল এজেন্টরা এই নিয়ম মানবে না বলেই ধারণা। সুপারভাইজর জেনিস হান স্বীকার করেছেন যে বিষয়টি আদালতে গড়ানো প্রায় নিশ্চিত, কিন্তু তার মতে “গোপন পুলিশের মতো আচরণকারী” এজেন্টদের থামাতে এই আইনি লড়াই জরুরি।
বোর্ডের সব সদস্য যদিও সমর্থন করেননি। সুপারভাইজর ক্যাথরিন বার্গার ভোটদানে বিরত থেকে প্রশ্ন তুলেছেন—এই আইন প্রয়োগ করবে কে? তার মতে, প্রয়োগের স্পষ্ট কোনো পথ নেই, তাই এটি মানুষকে ভুয়া নিরাপত্তাবোধ দিতে পারে। এদিকে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহকারী সচিব ট্রিশা ম্যাকলাফলিন ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে তারা এই নিষেধাজ্ঞাকে সুপ্রীমেসি ক্লজ অনুযায়ী অবৈধ মনে করেন এবং মানার প্রয়োজন নেই। ফলে বিষয়টি স্পষ্টত আদালতের দিকে এগোচ্ছে, আর ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে এলএ কাউন্টির আরেকটি বড় সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।