নিউইয়র্ক

এবার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হল দাসপ্রথা অবসান


বর্ণবাদী হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে শহরে শহরে আগে থেকেই বিক্ষোভ চলছিল। সেই বিক্ষোভে নতুন মাত্রা যোগ করে দাসপ্রথা অবসান বা জুনটিনথ দিবস। দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার শহরে শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভ কারীরা এ সময় বর্ণবাদের বিচার চান। তাঁরা মধ্যরাতের দিকে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এক দাস মালিকের ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেন, বলে জানা যায়। ১৮৬৫ সালের ১৯ জুন টেক্সাস অঙ্গরাজ্যর গালভিস্টনে সব বন্দীদের দাসত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে গোটা যুক্তরাষ্ট্র থেকে দাসপ্রথার অবসান ঘটে। যদিও ষোড়শতম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন আড়াই বছর আগেই টেক্সাস ও অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করেছিলেন। 


সবশেষ গালভিস্টন থেকে দাসপ্রথা বিলুপ্তির দিনটিকে জুনটিনথ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মাইলফলক এই দিনটিকে সাধারণত প্রার্থনা, পারিবারিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করে থাকেন মানুষ। কিন্তু এবারে এই দিনটির তাৎপর্য বেড়ে গেছে। গত ২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে নৃশংসভাবে খুন হন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গোটা যুক্তরাষ্ট্রে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ–বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে ১২ জুন জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা পেছন থেকে গুলি করে রেশার্ড ব্রুকস নামের আরেক কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করেন। যা বিক্ষোভকে আরও উসকে দেয়। পুলিশ সংস্কারের দাবিও জোরালো হয়ে ওঠে। ফলে জুনটিনথ দিবসে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে গতি আসে।

দিবসটি উপলক্ষে হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। শহরে শহরে হয় সমাবেশ, পদযাত্রা। সবচেয় বড় পদযাত্রা ও সমাবেশ হয়েছে জর্জিয়ার আটলান্টা, ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো, ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলস, নিউইয়র্ক সিটি ও ওয়াশিংটন ডিসিতে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজ থেকে ম্যানহাটন পর্যন্ত পদযাত্রা করেন কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় তাঁরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুলিশের হাতে নিহত নারী ও পুরুষের নাম ধরে স্লোগান দেন। এ সময় বিক্ষোভকারী তাবাথা বার্নাড (৩৮) বলেন, এই বছর সমগ্র দেশ পরিবর্তনের পক্ষে সোচ্চার। আমাদের পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত এটা (বিক্ষোভ) চালিয়ে যেতে হবে। শহরে শহরে বিক্ষোভ, ওয়াশিংটন ডিসিতে এক দাসমালিকের ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেন বিক্ষোভ কারীরা

রেশার্ড ব্রুকসকে যে শহরে গুলি করে হত্যা করা হয়, সেই আটলান্টায় হাজারো বিক্ষোভকারী পদযাত্রা করেন। সবচেয়ে বড় সমাবেশ হয় ওয়াশিংটনের লিঙ্কন মেমোরিয়ালের সামনে ও হোয়াইট হাউসের কাছে। পদযাত্রার আয়োজন করা হয় শিকাগোতে। উৎসবমুখর পরিবেশে এমন শোভাযাত্রা হয় দক্ষিণ লস এঞ্জেলেসেও। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন না জানিয়ে উল্টো বিতর্কিত মন্তব্য করে তা উসকে দিচ্ছেন। জুনটিনথ দিবসেই বর্ণবাদী সংঘাতের জন্য স্মরণীয় ওকলাহামা অঙ্গরাজ্যের তুলসা শহরে লকডাউন পরবর্তী পুনর্নির্বাচনী জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

এলএ বাংলা টাইমস/এম/বিএইচ