ধর্ম

বিভিন্ন দেশে ঈদ উদযাপনের রেওয়াজ

হাসি-আনন্দ, খুশিতে ভরা ঈদ আসে বছর ঘুরে প্রতিবার। কিন্তু এই আনন্দ কখনও পুরনো হয় না। বরং শাওয়াল মাসের প্রথম এই দিনটিকে ঘিরে থাকে প্রতীক্ষা। রোজা এলেই শুরু হয় দিন গণনা। সেই অপেক্ষার দিন ফুরায় এক মাস পর। দীর্ঘ একমাস রোজা বা সংযম পালনের পর ঈদ সবার জন্য নিয়ে আসে খুশির বার্তা। তবে বিভিন্ন দেশে ইদ উদযাপনের রেওয়াজে রয়েছে পার্থক্য। ঈদের সময় তুরস্কের লোকেরা অন্যান্য দেশের মুসলিমদের মতোই একজন আরেকজনের বাসায় বেড়াতে যান। এ সময় ছোটরা বড়দের আশীর্বাদ লাভের আশায় তাদের হাতে চুমু খায়। সেখানকার রীতি অনুযায়ী ছোটরা হাতে চুমু খেলে তাদের টাকা-পয়সা বা উপহারসামগ্রী দিতে হয়। এ দিন তারা শুধু মিষ্টি জাতীয় খাবার দিয়ে সবাইকে আপ্যায়ন করে। কুয়েতে দুই ঈদের পাশাপাশি নবীর জন্ম এবং মৃত্যুদিনগুলোকেই জাতীয়ভাবে পালন করা হয়। সাধারণ আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি এ দেশের মানুষ ঈদের দিন ভেড়ার মাংস দিয়ে ভোজের আয়োজন করে। পুরুষরা বিশেষ ধরনের তলোয়ার নৃত্য বা আর্ধা প্রদর্শন করে। ইরানে শিয়া প্রাধান্য থাকায় ঈদের চিত্রটা একটু অন্যরকম। এখানে অনেকটা অনাড়ম্বরভাবেই ঈদ-উল ফিতর পালন করা হয়। তাদের মতে এই ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে দান। তাই অভাবগ্রস্তদের মধ্যে তারা খাবারদাবার বিতরণ করেন। খাবারের মেনুতে থাকে কাবাব, ভাত, গ্রিল করা টমেটো, বিভিন্ন সবজি আর দই। মালয়েশিয়ানরা ঈদের বিশেষ খাবার হিসেবে বাঁশের কোটরে ভাত রান্না করে। একে ‘লেম্যাঙ’ বলে। নারকেল গাছের পাতা দিয়ে পাত্র তৈরি করে ভাত রান্না করে তারা। এটিকে বলে কেটুপাট। বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের অন্যদের নিয়ে তারা এই খাবারটি মাংস, তরকারিসহ খেয়ে থাকেন। জর্ডানে তিন দিন ধরে মুসলিমরা তাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ঘুরে বেড়ান। এ সময় মহিলারা খেজুর থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করেন। এ ছাড়াও জর্ডানের ঈদ আতিথেয়তায় অন্যতম উপাদান হচ্ছে অ্যারাবিক কফি এবং চকোলেট। পশ্চিমা দেশগুলোতে ঈদ উদযাপনের চিত্র একটু অন্যরকম।সেখানে মুসলিম আধিপত্য না থাকায় ঈদ অনেকটা অনাড়ম্বরভাবে পালিত হয়। তবে সব জায়গাতেই মুসলমানরা একত্রিত হয়ে নামাজ আদায়ের পর শুভেচ্ছা বিনিময় করে। যেমন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ঈদ উপলক্ষে বিশাল এক জনসমাগম হয়। এরপর চলে বিশাল ভোজ। মালয়েশিয়ান, ইন্দোনেশিয়ান, ইনডিয়ান, পাকিস্তানি আর বাংলাদেশি খাবারের লোভে অনেকেই সেখানে এই দিনে জড়ো হন। এলএবাংলাটাইমস/এজেড