খেলাধুলা

অভ্যুত্থানের সময় সাফারি পার্কে ঘোরাঘুরির ছবি নিয়ে: ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব

গত বছর জুলাইয়ে পুরো দেশ যখন আন্দোলনে উত্তাল, তখন সাকিবকে দেখা গিয়েছিল কানাডায় সাফারি পার্কে ঘুরতে। সেই ছবি ফেসবুকে দিয়েছিলেন সাকিবের স্ত্রী শিশির। দেশের পটপরিবর্তনের পর সেই সময়ে সাকিবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এরপর আর দেশেই ফিরতে পারেননি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের এই সংসদ সদস্য। কেন সেই সময় এমন নীরব ভূমিকা নিয়েছেন, সাফারি পার্কে ঘোরাঘুরির ছবিটা দেওয়া কি ভুল ছিল, এই রকম অনেক কিছু নিয়ে সম্প্রতি সাকিব কথা বলেছেন দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।
সাফারি পার্কে ঘোরাঘুরির ছবি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সাকিব বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি তখন বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে মেজর লিগ ক্রিকেট খেলতে গেলাম, তারপর কানাডায়। ছবিটি কানাডায় তোলা। আমি নিজে এটি পোস্ট করিনি। তবুও, আমি এর দায়ভার নিচ্ছি। এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক ভ্রমণ ছিল। এখন বুঝতে পারছি, হ্যাঁ, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমার আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। আমি এটা স্বীকার করছি। কিন্তু আমার মনোযোগ সব সময় ক্রিকেটের দিকে ছিল—সংসদ সদস্য হওয়ার আগে এবং পরেও। আমাকে কখনো রাজনীতিতে জড়িত হতে বলা হয়নি। আমাকে সব সময় বলা হয়েছে, "শুধু ক্রিকেট খেলো।" তাই আমি সেদিকেই মনোযোগ দিয়েছি।’ সেই ছবিটা যে এমন প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে, তা আন্দাজ করতে পারেননি বলে দাবি সাকিবের, ‘সত্যি বলতে, আমি ভাবিনি এটা (ছবিটা) এত ছড়িয়ে পড়বে। প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়ার পর, আমি বুঝতে পেরেছিলাম পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। অনেকে আমাকে বলেছে, ওই সময়ে ওই ছবি দেখে তারা কষ্ট পেয়েছে। এখন বুঝতে পারছি, ওটা একটা ভুল ছিল। এমনকি অন্যরাও একই রকম জিনিস পোস্ট করলেও, আমারটা বেশি মনোযোগ পেয়েছে। এটা হয়তো আমি বলেই হয়েছে। তবে আমার আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’ কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ খেলার সময় এক দর্শকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা লেগে গিয়েছিল সাকিবের। সাক্ষাৎকারে সাকিব কথা বলেছেন সেই প্রসঙ্গেও, ‘আমার মনে হয় সেই লোকটা আমাকে উসকানি দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিল। অথবা হয়তো সে খুবই হতাশাগ্রস্ত ছিল। সে বারবার জিজ্ঞাসা করছিল, কেন আমি কিছু করছি না। একপর্যায়ে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি, ‘‘ভাই, আপনি কী করেছেন?’’। সেখান থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। দেখুন, আমি কিছু করেছি কি না, সেটা মানুষ বিচার করবে। কিন্তু কেউ যদি আমাকে বারবার প্রশ্ন করে, আমার কি জবাব দেওয়ার অধিকার নেই? আমি এমনকি তাকে—এবং সেখানে থাকা অন্যদের জিজ্ঞাসা করেছি, আমি কী করতে পারি? আমি তো ওই সময়ের ঘটনাগুলো উপেক্ষা করছিলাম না। আমি শুধু জানতাম না কী করতে হবে, কোনটা কার্যকর হবে। সরকার এবং অন্যরা আমাকে কিছু পোস্ট করতে বলেছিল। কিন্তু তাতে কী লাভ হতো? ওটা কি সাহায্য করত? ওটা কি আগুনে ঘি ঢালত? আমি সব সময় দায়িত্বশীলভাবে কাজ করায় বিশ্বাস করি। আমি যদি সরাসরি পরিবর্তন আনতে না পারি, তাহলে ফাঁকা বুলি আওড়ে কী লাভ!’ রাজনীতিতে জড়িয়ে ক্রিকেটে ব্রাত্য হয়ে পড়া সাকিব আপাতত যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন। ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছাপূরণ হয়নি তার। খেলতে পারেননি পাকিস্তান ও দুবাইয়ে হওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস