সিলেট

দেশজুড়ে আবার আলোচিত হলো সিলেটিদের আতিথেয়তা

সিলেটীরা অতিথিপরায়ন হিসেবে পরিচিত। এবারও আতিথেয়তা দিয়ে ২ লক্ষাধিক মানুষের মন জয় করেছে সিলেট বাসী। গত শনিবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ সেশনের স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৭১ হাজারেরও অধিক পরীক্ষার্থী ভর্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তাদের সাথে আরো প্রায় দেড় লক্ষাধিক অভিভাবক ও আত্মীয়স্বজন আসেন সিলেটে। সব মিলিয়ে নগরে প্রায় ২ লাখের বেশী মানুষের সমাগম হয় সিলেটে। তবুও পরীক্ষার্থীদের কোন সমস্যা হয়নি।

সিলেটবাসী এতোই অতিথিপরায়ন যে- পরীক্ষার আগ মুহুর্তে ফ্রি মোটরসাইকেল সার্ভিস চালু করে। সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় ৩ শতাধিকেরও বেশী মোটরসাইকেল ছিলো। পরীক্ষার্থীদের সময়মতো কেন্দ্রে পৌছে দিতে তারা বিনা ভাড়ায় সার্ভিস দেন একেক টা পয়েন্ট থেকে ১/২ জন করে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গেইটে নামিয়ে দিয়ে আবার ফিরে আসে বাইকাররা নিজ দায়িত্বরত পয়েন্টে, এভাবেই চলে সারা দিন। এছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন কলেজ থেকে বাস বরাদ্দ দেওয়া হয়। এমসি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, বাস মালিক সমিতি,সেচ্ছাসেবি সংগঠথ থেকে ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করা হয় যা ছিল চোখে পড়ার মত। এডমিট কার্ড দেখিয়ে পরীক্ষার্থীরা বাস ব্যবহার করেন।

সিলেটের শীর্ষ ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ২০টি বাস চালু করে। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বাসগুলো ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ‘সিলেট বাইকিং কমিউনিটি’, সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন বুষ্টার সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন ফ্রি মোটরসাইকেল সার্ভিস দেয়। সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ভুগান্তি নামক হতাশা দেখা যায়নি। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছে যান।

সিলেটবাসীর পরম আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে আসা পরীক্ষার্থী তানিয়া জাহান শিমু বলেন – সিলেটে এই প্রথম আসছি। কিন্তু সিলেটবাসী যে এতো আন্তরিক তা জানা ছিলনা। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু সিলেটের মতো পরম মমতার চাদর কেউ দিতে পারেনি।

খুলনা বিভাগের ফুলতলা উপজেলা থেকে আসা পরীক্ষার্থী আদনান হোসেন হৃদয় বলেন- সিলেটের মানুষ সত্যিই অতিথিপরায়ন। এ এলাকার মানুষ যে এতো আন্তরিক তা সিলেটে না আসলে জানতাম না। শাবিতে যদি চাঞ্চ পেয়ে যাই, তাহলে সিলেটে থেকে লেখাপড়া শেষে চাকরিও করবো।

বরিশাল থেকে আসা এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক প্রফুল্ল দাস বলেন, সিলেটের মানুষ শান্তিপ্রিয়। আগে শুধু শুনেছি আর এখন নিজ চোখে দেখলাম। সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। মোটরসাইকেল, বাস সার্ভিস যানবাহনের সব রকমের সুবিধা ছিল প্রশংসা করার মতো। এছাড়া শহরের ট্রাফিক বাবস্থা ছিল চোখে পড়ার মত। পরীক্ষার্থীদের বহন করা গাড়ি দেখলেই পথ ছেড়ে দাঁড়ায় অন্যান্য যান বাহন।