২৫ বছরের সংগীতজীবনের অন্তিম অধ্যায় ঘোষণা করলেন সংগীতশিল্পী তাহসান খান। গত রোববার মেলবোর্নের মঞ্চে তিনি ভক্তদের সামনে জানান, এটি তার শেষ ট্যুর। নতুন গান, কনসার্ট—সবকিছু থেকে একেবারে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারের জন্য যোগাযোগ করা হলেও তাহসান স্পষ্ট করে জানালেন, আর কোনো সাক্ষাৎকার দেবেন না। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘রিটায়ার্ড মানুষ ভাই, নো ইন্টারভিউ প্লিজ।’
তিনি জানান, ঢাকায় দু-একটি পূর্বনির্ধারিত ইভেন্ট শেষ করেই সংগীতজীবনের ইতি টানবেন। নতুন গান তিনটি বানানো হলেও আর প্রকাশ করা হবে না। ‘পোরসেলিনা তাহসান’স প্লেলিস্ট’ প্রকল্পের শেষ গানটি হয়তো প্রকাশিত হবে, তারপর সবকিছু থেকে সরে যাচ্ছেন।
তাহসান জানান, মঞ্চে গান গাওয়ার আনন্দই সবথেকে মূল্যবান স্মৃতি। কিন্তু জীবনের নতুন অধ্যায় এবং মেয়ের বড় হয়ে ওঠা তাকে ভাবতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, ‘দাড়ি পেকে যাচ্ছে, এখন আর নিজের কাছেই প্রেমের গান গেয়ে মঞ্চ মাতানোটা মানানসই লাগে না।’
পাবলিক ফিগার হিসেবে বেঁচে থাকার চাপও ক্রমেই বেড়েছে, যা আর নিতে চান না। সেই কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকেও তিনি দূরে সরে যাচ্ছেন; ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম একেবারে ডিঅ্যাকটিভ করেছেন। তিনি চান মানুষ তাকে আস্তে আস্তে ভুলে যাক।
তাহসান জানান, ২৫ বছরের সংগীতজীবনকে তিনি কৃতজ্ঞতার চোখে দেখছেন। কোনো আফসোস নেই, বরং প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি অনেক বেশি। মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাজারো মানুষের সঙ্গে গান গাওয়ার মুহূর্তগুলোই সবচেয়ে মিস করবেন। এ প্রস্থান তার জন্য একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, যা জীবন ও অভিজ্ঞতার তীব্র উপলব্ধি থেকে এসেছে।
তিনি যোগ করেন, ‘সত্যি বলতে, কষ্ট আমারই বেশি হচ্ছে, যে গানকে জীবনের সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছি, সেই গান ছেড়ে দেওয়াটা মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু এই প্রস্থানই একমাত্র পথ, যা আমার জন্য খোলা।’
অস্ট্রেলিয়ার কনসার্ট শেষে তিনি বাংলাদেশে ফিরে তার পূর্বনির্ধারিত কাজগুলো শেষ করবেন। তারপর একেবারেই ব্যক্তিগত জীবনকে গুরুত্ব দেবেন, আর বিনোদন অঙ্গনে পুনরায় উপস্থিত হবেন না। এই বিদায় শুধু গানের জন্য, বরং জীবন ও মননের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
প্রসঙ্গত, ‘ব্ল্যাক’ ব্যান্ডের মাধ্যমে সংগীতে পথচলা শুরু করেন তাহসান খান। ব্যান্ডের হয়ে গেয়েছেন বেশ কিছু জনপ্রিয় গান। এরপর ২০০৪ সালে সোলো অ্যালবাম ‘কিছু কথা’ দিয়ে শ্রোতাদের হৃদয় জয় করে নেন। পরে একক শিল্পী হিসেবে এবং ‘তাহসান অ্যান্ড দ্য সুফিজ’ ব্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন। তার গাওয়া ‘চোখে চোখে কথা হতো’, ‘ভালবেসে কেউ ভুল করো না’, ‘যদি কোনোদিন’, ‘চলে যাও তবে’ ইত্যাদি গান বহু হৃদয়ে দাগ কেটেছে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস