সিলেট

হাইকোর্টের ঘোষণাঃ কয়েস লোদীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব অবৈধ

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি নায়মা হায়দার এবং বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ অনাস্থা প্রস্তাবকে অবৈধ ঘোষণা করেন। গত বছরের ১০ জুন সিসিকের নিয়মিত সভায় উপস্থিত ২৯ জন কাউন্সিলরদের মধ্যে ২৬ জন রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর প্যানেল মেয়র পদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। এর প্রেক্ষিতে কয়েস লোদী হাইকোর্টে রিট আবেদন (নং ১১৯২৫/২০১৪) দায়ের করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানির পর বুধবার এই আবেদনের রায় দেন।

রায়ে আদালত বলেছেন, গত বছরের ১০ জুন সিসিকের প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব অবৈধ এবং এর আইনী ভিত্তি নেই।

এদিকে সিসিকের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে যাওয়ায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর গত ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জেষ্ঠ্যতার ক্রমানুসারে প্যানেল মেয়র-১ কে সিসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন {নং ৪৬.০৭০.০২২.০০০০.২২৮.২০২১-০৮/১(৭)} জারি করে।

একই সাথে বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে জেষ্ঠ প্যানেল মেয়রকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ওই সময় আরিফুল হক চৌধুরী প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি।

এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্যানেল মেয়র-১ হিসেবে সিসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার কথা রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে প্যানেল মেয়র-২ এডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরী হাইকোর্টে গত ১৯ জানুয়ারি একটি রিট আবেদন (নং ৩৬৫/২০১৫) দায়ের করেন।

ওই রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নায়মা হায়দার ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম স্থানীয় সরকার আইন-২০০৯ এর ২১ ধারা অনুযায়ী সিসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।

বুধবার রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর পক্ষে আদালতে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন শাহ মোহাম্মদ এজাজ রহমান, মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার আবিদুল হক চৌধুরী। অন্যদিকে সালেহ আহমদ চৌধুরীর পক্ষে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস ও ব্যারিস্টার মেহদি হাসান চৌধুরী।

সিসিকের প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন- অন্যায় ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গত বছরের ১০ জুন সিসিক’র সভায় প্যানেল মেয়র পদ থেকে আমাকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। এর কারণ জানতে চাইলে কেউ সদুত্তর দেননি। ন্যায় বিচার পেতে আমি আইনের আশ্রয় নেই। প্রায় একবছর পর মহামান্য হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন তাতে সত্যের জয় হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে সত্য চাপা দিয়ে রাখা যায় না। আমি সহকর্মী সকল কাউন্সিলর ও নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।