আইটি

বিশ্বের সবচেয়ে ‘নিরাপদ’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কী হচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইটটি নিজেকে পরিচয় দেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে। কিন্তু আসলে সেটি প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইট। এটির সদস্য হতে অর্থ খরচ করতে হয়। তবে এটি ভিডিওর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অর্থ আয়ের সুযোগও করে দেয়। কিন্তু এর আড়ালে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটটি যা করছে, তা রীতিমতো ভয়ংকর বিষয়। পর্নো সাইট হিসেবে সর্বনাশ করছে অনেকের। আর এই সাইট ব্যবহার করে পর্নো তারকারা হয়ে উঠছেন আরও ধনী। ওই ওয়েবসাইটটির অন্ধকার দিক খুঁজে দেখতে একটি তদন্ত করেছে। তাতে দেখা গেছে, ১২০ জনের বেশি মার্কিন নাগরিক পুলিশের কাছে সাইটটি নিয়ে অভিযোগ করেছে। তাঁদের অভিযোগ, অনুমতি ছাড়াই ওই সাইটে তাঁদের যৌনজীবনের বিষয়বস্তু–সংবলিত ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এক নারী অভিযোগ করেছেন, তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। সেই ভিডিও ওই ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিরা এর বিচার পান না। আইন সব সময় এসব ওয়েবসাইটকে সুরক্ষা দিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামিতে স্যামি (পুরো নাম প্রকাশ করা হয়নি) নামের একজন নারী ২০২২ সালের এপ্রিলে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় যুক্ত ছিলেন দুজন। স্যামি দুজনকে আটকাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁদের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্যামি বলেন, ওই ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করেছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। ঘটনার ২ মাস পর ৩০ জুন ওই ঘটনার সম্পাদনা করা ভিডিও মার্কিন ওই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ওই দুই ব্যক্তি অর্থের লোভে সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে ভিডিও পোস্ট করেন। ওই ভিডিও চিত্রের ভিন্ন নাম দিয়ে বিপণন করেন তাঁরা। মার্কিন ওই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন তারকা, ইনফ্লুয়েন্সারসহ বিনোদনজগতের বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে পর্ন ভিডিও বিক্রি হতে দেখা যায়। এখান থেকে পর্নো তারকারা লাখ লাখ ডলার আয় করেন। ২০১৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৪ কোটি ব্যবহারকারীর প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে এটি। অনেকে একে মূলধারার সাইট হিসেবেও মনে করে থাকে। কারও কারও জন্য এটি অর্থ আয়ের প্ল্যাটফর্ম হলেও কারও জন্য এটি যন্ত্রণার নাম হয়ে উঠেছে। অনুমতি ছাড়া অনেকের ভিডিও এখানে প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে তাঁদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। স্যামির মতোই কারও কারও ক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নের ভিডিও এখানে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে সম্মতিহীন এসব ভিডিও প্রকাশের ক্ষেত্রে নজরদারি করা কঠিন। কারণ, নিপীড়নের ক্ষেত্রে আইনি পথে হাঁটার জন্য তথ্যপ্রমাণ থাকে কম। এলএবাংলাটাইমস/এজেড