প্রবাস

ওয়াশিংটনে ঐতিহ্যের উচ্ছ্বাসে মুখরিত মুনার পিঠা উৎসব

প্রতি বছরের ন্যায় ফ্যামিলি নাইট, কালচারাল শো এবং পিঠা উৎসব করেছে মুসলিম উম্মাহ্ অফ নর্থ আমেরিকা-মুনা’। সংগঠনটির ডিসি-ভার্জিনিয়া চ্যাপ্টার আয়োজিত এ উৎসবটি গত ৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ভার্জিনিয়া আলেকজেন্দ্রিয়ার থমাস এডিসন হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত হয়।
বাঙালীর ঐতিহ্যেরপূর্ণ সুস্বাদু পিঠা উৎসব বেশ আগ্রহ নিয়েই প্রবাসী বাঙালীরা অংশ গ্রহণ করে। সাময়িক সময়ের জন্য দেশীয় কৃষ্টিকালচারের স্বাদ আর ব্যতিক্রমধর্মী সাংস্কৃতিক আয়োজন নির্মল আনন্দের খোরাক যোগায় প্রাবাসীদের।

যান্ত্রিক ও ব্যস্ত জীবনের মাঝে দেশি আমেজে একটু সময় কাটানো এবং বাংলাদেশি ঐতিহ্য প্রবাসীদের মাঝে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন করা হয় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বিপুলসংখ্যক প্রবাসীরা পরিবার পরিজনসহ উৎসবে অংশগ্রহণ করে।
অংশগ্রহনকারী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হরেক রকম পিঠা-পুলি বা পায়েশ খেয়ে একদিকে যেমন তৃপ্তি পন, অন্যদিকে বাঙ্গালীর শীতকালীন পিঠা খাওয়ার ঐতিহ্যবাহী উৎসবের মাঝে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন অপার মহিমায়।
সকলের জন্য উন্মুক্ত পিঠা মেলায় পৃথক পৃথকভাবে ছেলে ও মেয়েদের পিঠা খাওয়ার ব্যবস্থা করে। প্রায় ২০-২৫ রকমের বিভিন্নধর্মী পিঠা ছিল আয়োজনে। পিঠা মেলার স্টলের তত্ত্বাবধানে ছিলেন- মোহাম্মদ বাশার, ফজলুল হক, রেজাউল করিম।
মুনার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যার পরে। তিন সেশনে মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন- মুহাম্মদ শাহ আলম শাওন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন- ইমরান খান। পরে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন মুনার নেতা বশির আহমেদ। প্রথম পর্বে অতিথি শিল্পী ছিলেন- ইয়াছিন রাহিন। প্রধান বক্তা ছিলেন, মুনার জাতীয় শিক্ষা বিষয়ক পরিচালক আবু সামিহা সিরাজুল ইসলাম।

সাংস্কৃতিক পর্বে এই অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত করে তোলে শিশু-কিশোরদের হামদ, নাতসহ বিভিন্ন উপস্থাপনা।
রাত ৮টায় শুরু হওয়া দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে গ্রুপ কোরআন তেলওয়াত করেন ভার্জিনিয়ার ছোট শিশুরা।আর সঙ্গীত পরিবেশনা করেন স্প্রিং ফিল্ড ভার্জিনিয়ার শিশুরা। পরে ব্যতিক্রমধর্মী সঙ্গীত পরিবেশন করেন মিশিগান থেকে আগত শিল্পীরা যা আগত অতিথিদের মন জুড়িয়ে দেয়। যেসব সঙ্গীত পরিবেশনা করা হয়, তার মধ্যে ছিল- যাদের হৃদয়ে আছে আল্লাহর ভয়, ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে, এই যে দুনিয়া কিসেরও লাগিয়ে, কলো কলো-চলো চলো- নদী করে টলো মলোসহ বিভিন্ন সঙ্গীত।

এই পর্বে আরও ছিল- জোকস্, কবিতা, ফ্যানি নিউজসহ বিভিন্ন আয়োজন। যা দর্শকদের মনের খোরাক যোগায়।
তবে এই পর্বে সবচেয়ে আকর্ষীয় করে তোলে একটি ব্যতিক্রমধর্মী নাটক। বর্তমান দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে। যা নাটকের কাল্পনিক চিত্রে, চিত্রায়িত করে রূপক অর্থে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে বোঝানো হয়।পরিচালনায় ছিলেন জাহিদূর রহমা।
সর্বশেষ পর্বে সমাপনী কথা বলেন, মুনার জাতীয় বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ বিভাগের পরিচালক মো. জিয়াউল ইসলাম শামীম।
উৎসবে মুনা নেতৃবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যাক্তিরা। তাদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার মান্নান,আইটিপিএফ পরিচালক  মোশারফ হোসেন, আইটিপিএফ পরিচালক আইটি জামান,শামিম হায়দার(ফটোগ্রাফার),জাকির হোসেন(ডেটাগ্রুপ), বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আব্দুর রব,রিয়েলেটর মাজলু রহমা, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ড.মোহাম্মদ জাকির হোসেন,ড.নজরুল ইসলাম,লেখক ও কলামিস্ট মোহাম্মদ আলম,ব্যাবসায়ী সারিকুল ইসলাম,মোহাম্মদ কামাল হোসাইন,ডাঃসাইদা বেগম,ডঃখাদিজা বেগম,ড.ফরিদা ইয়াসমিন সহ অনেকে।
আগত অতিথিরা অসাধারণ এই আয়োজেনের জন্য মুনা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।মেলায় আগত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, আয়োজনে কোন ঘাটতি রাখেনি মুনা। বিদেশের মাটিতে হরেক রকমের পিঠার স্বাদ নেওয়ার সুযোগ ও ব্যতিক্রম ধর্মী সাংস্কৃতিক আয়োজন করায় সত্যি খুবই খুশি। মুনা বারবার এমন আয়োজন করে ভ্রাতৃত্ববন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করুক এমনটাই চাই আমরা।
আয়োজকরা আগত সকল অতিথিদের শত ব্যস্ততা ফেলে কষ্ট করে অনুষ্ঠানে হজির হওয়ায় কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।