প্রবাস

বিসিসিডিআই বাংলা স্কুলের বিজয় মেলা ও পৌষ পিঠা উৎসব

গত ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, শনিবার ভার্জিনিয়ার এ্যনানডেল নোভা কলেজ ক্যাম্পাস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত  হলো বিসিসিডিআই বাংলা স্কুলের বিজয় মেলা ও ১৩তম পৌষ পিঠা উৎসব-২০১৭।  পৌষের হিম ঝরানো শীত উপেক্ষা করে বিপুল উৎসাহ,  উদ্দীপনায় আর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় আনন্দস্মৃতি বুকে লালন করে অনুষ্ঠিত হল বৃহত্তর মেট্রো ওয়াশিংটন ডিসির এবছরের (শীতকালীন) প্রথম পৌষ পিঠা উৎসব ।শতরুপা বড়ুয়া ও শামীম চৌধুরীর  সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মিলিত জাতীয় সঙ্গীত -আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি - পরিবেশন করা হয় যেখানে হলভর্তি দর্শক দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। এর আগে ১৯৭১সালের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সব বীর বাঙ্গালী শহীদগন তাদের জীবন উৎসর্গ বিজয় অর্জন করেছিলেন তাদের প্রতি অপরিসীম    শ্রদ্ধা নিবেদন করে নির্মিত অস্থায়ী প্রতিকী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস, বিসিসিডিআই, বাগডিসি, বাই, আবিয়া, আগামী, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যলামনাই এসোসিয়েশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যলামনাই এসোসিয়েশন,  বাংলাদেশ সহ মেট্রো ওয়াশিংটন এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুস্পস্তবক অর্পন করেন।

প্রতিকী শহীদ মিনারটি নির্মাণ করেন চিত্রকর হারুন অর রশিদ। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রায় দীর্ঘ দেড়যুগকাল সময় বাংলাদেশের স্মৃতিসৌধ বুকে লালন করে ২০১৬ সালে প্রথম মেট্রো ওয়াশিংটন এলাকায় শহীদ মিনারটি নির্মাণ করেন।

বাংলা স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে "এসো আঁকি বিজয়ের রঙে" শীর্ষক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা,  দেশাত্মবোধক গান ও নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে বাংলা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনা ছাড়াও অতিথিশিল্পী হিসেবে গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী দিলরুবা খানের কন্যা শিমুল খান । সবশেষ পরিবেশনা ছিল মেট্রো ওয়াশিংটনের স্বনামধন্য ব্যান্ড শ্যাডো ড্রিমস্ ।

 বিভিন্ন স্ষ্টলে শোভা পাচ্ছিল শাড়ী-চুরি-গহনা , ফতুয়া-পান্জাবীসহ বিভিন্ন খেলনাসামগ্রী। এছাড়াও সখীদের পিঠা ঘর, রকমারী খাবার ঘর, পিঠা ঘর, ভাই ভাবির দোয়ান, ঝাল টক মিষ্টি, পিঠা পল্লী, রসনা বিলাস ইত্যাদি দোকানে শোভা পাচ্ছিল বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানান আকৃতি, নানান স্বাদ আর রঙের পিঠা। বিভিন্ন দোকানে শোভা পাচ্ছিল পাটিসাপ্টা, ভাপাপিঠা এলোগেলো, বুলশা, বিবিখানা, তেলেপিঠা, চিতইপিঠা, চানার সন্দেষ, গজাগজা, পাকুনপিঠা, মাংশেরপিঠা, নারিকেল পুলি, নিমকি, চুপতি পিঠা, ঝালপিঠা, সাবুদানার, ডালপুরি , ডালপাকন, পানতুয়া সহ প্রায় পঞ্চাশ রকমের পিঠা।বাংলা স্কুলের সভাপতি আতিয়া মাহজাবিন এবং সাধারণ সম্পাদিকা শিমুল সাহা  উপস্থিত দর্শকদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং বাংলা স্কুলের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
১৯৮৭ সাল থেকে যে সংগঠনের পথচলা, সেই বি সি সি ডি আই বাংলা স্কুল বিজয় মেলা ও ১৩তম পৌষপিঠা উৎসব  আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের  আবারও নজর কেড়ে নিল, সহস্রাধিক দর্শকদের উপস্থিতিতে মনে হচ্ছিল ওয়াশিংটনে ছোট্ট একটা বাংলাদেশ ।