প্রবাস

বিএমএস-এর বার্ষিক নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রোতা-দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করলেন সাবিনা ইয়াসমিন

হারানো দিনের বাংলা চলচ্চিত্রের গান গেয়ে শ্রোতা-দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করলেন কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল সোসাইটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (বিএমএস) এর বার্ষিক নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে 'এই মন তোমাকে দিলাম' শিরোনামে জনপ্রিয় এই শিল্পীর একক সঙ্গীতানুষ্ঠানটির আয়োজন করে উক্ত সংগঠন। গত ৭ এপ্রিল ২০১৮ শনিবার সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের ওরিয়ন ফাংশন সেন্টারে আয়োজন করা হয়েছিলো এ অনুষ্ঠানটির।

নৈশভোজের পর শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। সংগঠনের সমাজকল্যাণ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডাঃ শায়েক খান শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা করেন। উপস্থাপনা করেন ডাঃ আয়েশা আবেদিন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে সাজানো হয়েছিল। প্রথম পর্বে ছিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মতিউর রহমান ও  ডাঃ মীরজাহান মাজুর বক্তব্য। পরবর্তীতে সংগঠনের কর্মকাণ্ডে অবদান রাখার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের সম্মাননামূলক ক্রেস্ট প্রদান করা হয় এবং সংগঠনটির বাৎসরিক ম্যাগাজিন 'প্রতিধ্বনি'র দ্বিতীয় সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্রকাশনা সম্পাদক ডাঃ ফখরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে 'প্রতিধ্বনি'র সকল কলাকুশলী, লেখক, পাঠক, ডিজাইনার ও পৃষ্ঠপোষকদের ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন সংগঠনটির কল্যানে অবদান রাখার জন্য কোষাধ্যক্ষ ডাঃ জেসমিন শফিককে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় এসময়।  

দ্বিতীয় পর্বে শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন দর্শকের মাঝে সুরের আবেশ ছড়িয়ে দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশাত্মবোধক গান 'সব কটা জানালা খুলে দাও না' গেয়ে আসর শুরু করেন শিল্পী।  এরপর একে একে গায়লেন সুন্দর সুবর্ণ তারুন্য লাবন্য অপূর্ব রূপসী, মাঝি নাও ছাইড়া দে, চিঠি দিও জনপ্রিয় গানগুলো। সংক্ষিপ্ত সময়ের বিরতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় - ডিএসআই বর্তমানে বাংলাদেশের অভাবগ্রস্থ শিশুদের সার্বিক সহযোগীতায় কাজ করে আসছে। তারা শিক্ষার মাধ্যমে অভাবি- সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আলোর পথ দেখাতে এবং সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত কারার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এটি একটি সেবামূলক সংগঠন, ডিএসআই এর প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ এহসানকে এসময় মঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। ডাঃ এহসান তৎক্ষণাৎ তাঁর বক্তব্যে প্রবাসীদের সবাইকে ডিএসআই এর উদ্দেশ্যকে সফল করতে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, সাবিনা ইয়াসমিন ডিএসআই-এর একজন শুভেচ্ছা দূত। বাংলাদেশের অভাবি শিশুদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার আশা ব্যক্ত করেন সাবিনা ইয়াসমিন।

মধ্য বিরতির পর অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন বাংলা চলচ্চিত্রের গানের ডালি সাজিয়ে তুলেন সুর আর ছন্দে। নিজস্ব তালিকা ছাড়াও দর্শকদের অনুরোধে ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘ইশরায় শিষ দিয়ে’, ‘একটুস খানিক বল ভালোবেসে বউ বলে ডাকো’সহ একে একে প্রায় ২০টি গান গেয়ে শোনান তিনি।

বাংলা সঙ্গীতের ধারাকে এক অন্য মাত্রায় যারা নিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সাবিনা ইয়াসমিন অন্যতম। অসম্ভব জনপ্রিয় এই শিল্পীর ভক্ত শ্রোতা অনেক। প্লেব্যাকে কণ্ঠ দেয়া এই শিল্পীর হাজারো গান চিরদিন শ্রোতা হৃদয়ে সুরের ঝড় তুলবে এমনই মধুর-গুঞ্জনে স্মরণীয় হয়ে রইলো সেদিনের আরাধ্য সন্ধ্যাটি।

সবশেষে বিএমএস-এর পক্ষে শিল্পী, কলাকুশলী ও আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জানান ডাঃ মতিউর রহমান। সাবিনা ইয়াসমিন এবং তাঁর সাথে আগত যন্ত্রশিল্পীদের উপহার তুলে দিয়ে অভিনন্দন জানান সংগঠনের কর্মকর্তাগণ। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ মতিউর রহমান, ডাঃ মীর জাহান মাজু, ডাঃ শায়েখ খান, ডাঃ জেসি চৌধুরী, ডাঃ শায়লা ইসলাম, ডাঃ জেসমিন শফিক, ডাঃ ফাহিমা সাত্তার প্রমুখ।


এলএবাংলাটাইমস/এএল/এলআরটি