আমেরিকা

যেসব কারণে জয়ী হলেন জো বাইডেন

ইতিহাস গড়ে শ্বাসরুদ্ধকর নির্বাচনে জয়ী হলেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন। সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে তিনি হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট। দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও ডেমোক্র্যাটদের বাজির ঘোড়া যে বাইডেনই হবেন, অনেকেই ভাবতে পারেনি তা৷ তবে শেষমেষ সব জল্পনাকল্পনা শেষে জয় পেলেন জো বাইডেন।  রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন বাইডেনের জয়ের কারণ। চলুন দেখে নিই কী চার কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে
জো বাইডেন হলেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। করোনাভাইরাস, বাইডেনের জন্য শাঁপে বর: ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাগ্য বেশ খারাপই বলতে হয়। বিশ্বজুড়ে এমন একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লো তাঁর আমলে, যেটি সামলাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হলেন তিনি। উপরন্তু একের পর এক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে হোন আরো সমালোচিত। মরণঘাতী এই রোগে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে মারা যায় ২ লক্ষের বেশি মানুষ। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন করোনাকে। বলেছেন, এটি তুচ্ছ এক ভাইরাস। জো বাইডেনের জন্য করোনাভাইরাস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প- দুইটিই শাঁপে বর হয়ে এসেছে। মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর থেকে জনগণের আস্থা কমে গেছে অনেকাংশে, ফলে জনগণ বেছে নেন জো বাইডেনকে। বাইডেন শিবিরের চতুর পদক্ষেপ: দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে জো বাইডেন বরাবরই সমস্যার বিরুদ্ধে ও সমস্যাগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবারে এটির ফায়দা তুলতে পেরেছেন জো বাইডেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির শেষবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ বড় কিছু ঘটনাও এই ক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যা, বিতর্কিত অভিবাসন নীতি বেশ ভুগিয়েছে ট্রাম্পকে। একের পর এক জনরোষের মুখে পড়েছেন ট্রাম্প, তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জনগণের মধ্যে কোনো আস্থা তৈরি করতে পারেননি তিনি। উল্টো বিতর্কিত মন্তব্য করে জনরোষ উস্কে দিয়েছেন ট্রাম্প। অপরদিকে ডেমোক্রেটিক শিবির বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে আন্দোলকারীদের সাথে একমত হয়েছে, অথবা নীরব থেকেছে। ফলে বলাই যাই, ট্রাম্পের বিবৃতিই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, আর সুযোগ দিয়েছে বাইডেনকে। ট্রাম্প ছাড়া অন্য যে কেউ: এবারের নির্বাচনে বেশ ভালো একটি এজেন্ডা সৃষ্টি করেছেন জো বাইডেন। বরাবরই বলে এসেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দেশে প্রকৃত প্রাণ ফিরিয়ে আনা হবে। অপরদিকে, ট্রাম্প গত চার বছরে আমেরিকাকে ক্রমেই বিভক্ত করেন। বেশকিছু বিতর্কিত আইন পাশ করানোর পাশাপাশি বিশ্বের দেশগুলোর আস্থা হারাতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত সব কর্মকাণ্ড এক প্রকার বিরক্তই করছিলো বাসিন্দাদের। ফলে এবারের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি নিজেই। ব্যক্তি ট্রাম্প হিসেবে সেখানেই তরী ডুবিয়েছেন ট্রাম্প। বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়ায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ছাড়া অন্য যে কাউকেই দেখতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা। আর সেই সুযোগটিই পেয়ে গেছেন জো বাইডেন। অর্থ বেশি হলে সমস্যাও কম: এবারের নির্বাচনে বেশ ভালো আর্থিক সহায়তা পেয়েছে জো বাইডেন শিবির। ফাণ্ড রাইজিং কর্মসূচির আওতায় বেশ ভালো অংকের অর্থ জমা হয় বাইডেনের নির্বাচনী ফাণ্ডে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের থেকে এক সময় সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৪৪ মিলিয়ন বেশি। ফলে প্রচারণা চালাতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি জো বাইডেনকে। সেইসাথে টেলিভিশন ও অন্যান্য প্লাটফর্মে জো বাইডেনের স্বপক্ষে এডভার্টাইজিং এর কমতি ছিলো না। এলএবাংলাটাইমস /ওএম