আমেরিকা

জ্বালানি পাইপলাইনে সাইবার হামলা: জরুরি আইন জারি

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি সরবরাহ প্রতিষ্ঠান কলোনিয়ান পাইপলাইন সাইবার হামলার শিকার হয়ে কার্যক্রম সম্পূর্ন বন্ধ রেখেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জরুরি আইন জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এই আইনের ফলে, জ্বালানি বহনকারী গাড়ির চালকেরা স্থলপথে আরো বেশি সময় ও সহজে জ্বালানি বহন করতে পারবে। রবিবার (৯ মে) এই জরুরি আইনটি জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ১৮ রাজ্যের চালকেরা ডিজেল, গ্যাসোলিন ও জেট ফুয়েলসহ অন্যান্য পরিশোধক জ্বালানি বহনের সময় বাড়তি সময় কাজ করতে পারবে। গত শুক্রবার থেকেই কলোনিয়াল পাইপলাইনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ফলে জ্বালানি সংকট সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই এই নিয়ম জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। আলাবামা, আরকানাস, ডিস্ট্রিক্ট অব কলুম্বিয়া, ফ্লোরিডা, ডেলওয়ারে, জর্জিয়া, ক্যানটাকি, নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, মিসিসিপি, লুইজিয়ানা, মেরিল্যান্ড, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভেনিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা, টেনেসে, টেক্সাস ও ভার্জিনিয়া রাজ্যে এই আইন বহাল থাকবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কলোনিয়ান পাইপলাইনে সৃষ্ট এই সংকটের কারণে জ্বালানির মূল্য দুই থেকে তিন শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তবে কার্যক্রম বন্ধ থাকলে আরো সংকটের সৃষ্টি হবে।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট অয়েল মার্কেট অ্যানালিস্ট গৌরভ শর্মা বলেন, 'টেক্সাসে অপরিশোধিত অনেক জ্বালানি পরে আছে। মঙ্গলবারের মধ্যে পাইপলাইনের সরবরাহ শুরু না হলে বড় সমস্যার সৃষ্টি হবে৷ সর্ব প্রথম আটলান্টা ও টেনেসেতে এর প্রভাব পড়বে। এরপর ডমিনো এফেক্ট পড়বে নিউ ইয়র্কে'। বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এই সাইবার হামলার পিছনে দায়ী ডার্কসাইড নামের সাইবার ক্রিমিনাল গ্রুপ। তারা ১০০ জিবি তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে ও এর জন্য অর্থ দাবি করছে। কলোনিয়ান পাইপলাইন যুক্তরাষ্ট্রের পরিশোধক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গালফ কোস্ট থেকে সাউদার্ন ও ইস্টার্ন অংশে জ্বালানি সরবরাহ করে থাকে৷ এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যারেল গ্যাসোলিন, ডিজেল, জেট ফুয়েল এবং অন্যান্য পরিশোধক জ্বালানি ৫ হাজার ৫০০ মাইল লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করে থাকে। ইস্ট কোস্টের ৪৫ শতাংশ জ্বালানির যোগানদাতা এই প্রতিষ্ঠানটি। শুক্রবার সাইবার হামলার বিষয়টি নজরে আসতেই সম্ভাব্য হুমকির কারণে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে৷ এই হামলায় প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তি বিভাগের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে ও সাময়িকভাবে কার্যক্রমটি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বিবৃতিতে জানায়, এই সাইবার হামলার বিষয়টি তদন্ত করতে অন্য সাইবার সিকিউরিটি এক প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করা হয়েছে৷ রাষ্ট্রীয় ফেডারেল এজেন্সিগুলোকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে কতোদিন নাগাদ তাদের জ্বালানি সরবরাহ সেবা বন্ধ থাকবে, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি কলোনিয়াল পাইপলাইন। এখন পর্যন্ত গ্যাসোলিন ও ডিস্টিলেট জ্বালানি সরবরাহ কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে৷ এলএবাংলাটাইমস/ওএম