আমেরিকা

মানবেতর জীবনযাপন করছে আটক অভিবাসী শিশুরা

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস সীমান্তের আটককেন্দ্রগুলোতে মানবেতর জীবন যাপন করছে অভিবাসী শিশুরা। ক্রমবর্ধমান রোগবালাই, খাবারের নিম্নমান এবং যৌন হয়রানির মতো ঘটনার অভিযোগ রয়েছে এই আটককেন্দ্রগুলোতে। সম্প্রতি ইউএস ম্যাক্সিকো সীমান্তের আটককেন্দ্রের কর্মী ও অভিবাসী শিশুদের সাথে কথা বলে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেন্ট্রাল আমেরিকার কিছু দেশ থেকে অভিবাসী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী মানুষের ঢল নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে। সহিংসতা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং মহামারি সংক্রান্ত অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এই ঢল নেমেছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে টেক্সাস রাজ্যের এল পাসোর ফোর্ট ব্লিজ মিলিটারি সেন্টারে ২ হাজারের বেশি অভিবাসী শিশু আশ্রিত রয়েছে। এদের সবাই টিনএইজ বয়েসী, এরা অভিভাবক ছাড়া একাই সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে৷ এখন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য এই কেন্দ্রগুলোতে অপেক্ষায় আছে৷ অভিবাসীকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, এখানে আটক শিশুদের মধ্যে রোগবালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে, যৌন হেনস্থা হয়েছে এমন অভিযোগ রয়েছে৷ এছাড়া অপরিচ্ছন্ন জামাকাপড় প্রদান, জরুরি চিকিৎসা সেবা পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা ও ক্ষুধার্ত শিশুদের ঠিকমতো রান্না না হওয়া কাঁচা খাবার প্রদান করার অভিযোগও উঠে এসেছে। সেই সাথে এসব কেন্দ্রতে করোনা ও লাইস মহামারিও দ্রুত ছড়াচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ফোর্ট ব্লিজ মিলিটারি বেজে অভিবাসীদের জন্য ১২টি তাঁবু আছে। এর মধ্যে কিছু তাঁবুতে অন্তত ১০০টি শিশু বাস করে। অধিকাংশ সময় শিশুদের এই তাঁবুতেই কাটাতে হয়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিনোদনের জন্য বাইরে যেতে পারে এরা। আর খাবার পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করতে হয়। আটককেন্দ্রের কর্মীরা খাবার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও ১৫ বছর বয়েসী এক শিশু জানান, অনেক সময় মাংস দেওয়া হয় যেগুলো পুরোপুরি সিদ্ধ হয়নি এমনকি অনেক সময় এসব মাংসে রক্ত লেগে থাকে। এছাড়া করোনার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বাড়ায় এসব কেন্দ্রের পাশেই অসুস্থ শিশুদের রাখার জন্য তাঁবু নির্মাণ করা হয়েছে৷ শিশুরা এটিকে 'কোভিড সিটি' বলে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী জানান, এখন পর্যন্ত অন্তত শতাধিক শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়েছে৷ এছাড়া জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদান থেকে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ ক্যাম্পের এক শিশু বলেছে, 'আমরা যখন কোনো ওষুধ আনতে যাই তারা আমাদের দিকে নোংরা দৃষ্টিতে তাকায়। এছাড়া নিজেদের মধ্যে তারা হাসাহাসি করে'। এদিকে, কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ প্রত্যাখান করে বলেছে, তারা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর৷ দ্য ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস ক্যাম্প পরিচালনা করতে একটি প্রাইভেট কোম্পানি নিয়োগ দিয়েছে। তারা আটককেন্দ্রের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে৷ এলএবাংলাটাইমস/ওএম