২ হাজার ৭০০ পৃষ্ঠা পর্যালোচনা ও প্রায় ৫০ ঘণ্টা তর্ক বিতর্কের পর ৬৯-৩০ ভোটে অবশেষে সিনেটে পাশ হল অবকাঠামো বিল। তবে এটিই চূড়ান্ত নয়, বিলটি এবার পাঠানো হবে হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ সদস্যদের কাছে। সেখানে যদি পাশ হয়, এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দ্বারা প্রস্তাবিত ১ লাখ কোটি ডলারের এই বিলটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঐতিহাসিক এক বিল। রাস্তাঘাট-ব্রিজ নির্মাণ ও মেরামত, উচ্চ গতির ইন্টারনেট, ট্রেন ও ক্লিন এনার্জি- এসব খাতে মূলত এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
১১০ বিলিয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ থাকবে: সড়ক, ব্রিজসহ অন্যান্য অবকাঠামো প্রজেক্টের পেছনে ১১০ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হবে। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তালিকায় অন্যান্য উন্নত দেশের তালিকায় অবকাঠামোগত দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ সূত্র জানিয়েছে, মোট হাইওয়ের ২০ শতাংশ আর ৪৫ হাজার ব্রিজের অবস্থা শোচনীয়। এসবের উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ করা ছাড়াও এই খাতে বিশুদ্ধ পানি নিষ্কাশন ও পরিবহন ব্যবস্থার জন্য আরো ৫৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
রেলখাতের জন্য ৫৫ বিলিয়ন: রেলখাতের উন্নয়নের জন্য ও যাত্রীসেবা বৃদ্ধি করার জন্য ৬৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উচ্চ সুবিধা সম্পন্ন রেল, ইন্টারসিটি এবং উচ্চ-গতি সম্পন্ন ট্রেনের পেছনে এই অর্থ খরচ করা হবে৷ এছাড়া আরো বেশি অঞ্চলের সাথে বিশেষ করে ইস্টার্ন সি-বোর্ডের সাথে রেল যোগাযোগ বাড়াতেও অর্থ খরচ করা হবে।
উচ্চ গতির ইন্টারনেটের জন্য ৬৫ বিলিয়ন ডলার: প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও নিম্ন আয়ের বাসিন্দাদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার সুবিধা বাড়াতে ও নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে ৬৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সরকারি এই অর্থ যেসব ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করবে, তাদের গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী ইন্টারনেট ডাটা প্যাক অফার করতে হবে ও মূল্য তুলনার সুযোগ থাকতে হবে।
ক্লিন এনার্জির জন্য বরাদ্দ ৭৩ বিলিয়ন ডলার: সবুজ ও পরিচ্ছন্ন প্রকৃতি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি বড় প্রতিশ্রুতি ছিল। নতুন পাওয়ার লাইন, নতুন ইলেট্রিক গ্রিড নির্মাণ ও ক্লিন এনার্জি খাতের ব্যাপ্তি বাড়াতে ৭৩ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নতুন ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ ও উচ্চ ভোল্টেজ সম্পন্ন ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ করে ক্লিন এনার্জি নিশ্চিত প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া মাটি ও মাইন ফিল্ড পরিচ্ছন্ন করতে আরো ২১ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হবে।
ঘাটতি পোষাতে ২৫৬ বিলিয়ন ডলার: বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হলে অবশ্যই কোনো খাত থেকে অর্থের আগমণ থাকতে হবে। আইনপ্রণেতা ও ডেমোক্রেটিকরা বলছেন, এই অবকাঠামো বিলের অর্থ অব্যবহৃত ইকোনমিক রিলিফ ফাণ্ড, ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর আরোপিত কর, হেলথ কেয়ার রিবেট প্যাকেজসহ অন্যান্য আরো ছোট-বড় খাত থেকে এই অর্থ আসবে। আগামী দশ বছরের ঘাটতি ধীরে ধীরে ২৫৬ বিলিয়ন ডলার দিয়ে পোষানো হবে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম