আমেরিকা

করোনা রিলিফ জালিয়াতি, ধরা পরে আত্মহত্যার নাটক!

কোভিড-১৯ বিজনেস এইড স্কিল জালিয়াতিতে ধরা পরে ৫৬ মাসের কারাভোগ এড়াতে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছেন এক ব্যক্তি। তবে নাটক করেও শেষ রক্ষা হয়নি, ঠিকই ধরা পরে গেছেন ডেভিড স্টেভেলি নামের ওই ব্যক্তি। ঘটনাসূত্রে জানা যায়, ফেডারেল গভর্নমেন্ট প্রোগ্রামের কাছ থেকে ৫ লাখ ৪৪ হাজার আর্থিক সাহায্য পাওয়ার জন্য নিজেকে চারটি বৃহৎ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সহমালিক দাবি করেন ডেভিড৷ পরবর্তীতে গত বছর জালিয়াতির অভিযোগ এনে ডেভিডকে ৫৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে এই সাজা এড়াতে আত্মহত্যার নাটক করে ভুয়া পরিচয়পত্র ও চুরি করা লাইসেন্স প্লেট নিয়ে তিনি পালিয়ে যান। কোভিড রিলিফ লোন জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্তদের মধ্যে ডেভিডই প্রথম ব্যক্তি। মামলার রায়ে বলা হয়, 'ডেভিড স্টেভেলি করোনার সময় আর্থিক সংকট সৃষ্টি হওয়ার অবৈধ সুযোগ গ্রহণ করেন। অর্থ যাদের জন্য বরাদ্দ ছিল, তাদের বঞ্চিত করে এই সুযোগে তিনি ধনী হতে চেয়েছেন'। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত ইউএস প্যা-চেক প্রোটেকশন প্রোগ্রামের (পিপিপি) আওতায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য স্বল্প লাভে প্রাইভেট লোন বরাদ্দ করে। ওই সময় স্টেভেলি (৫৪) এবং তার আরেক সহযোগী ডেভিড অ্যান্ড্রু বুটযিগার (৫৩) ভুয়া মালিকানার তথ্য দিয়ে তিনটি রেস্টুরেন্ট এবং ডক ওয়ারলেস নামের আরেক প্রতিষ্ঠানের জন্য লোন আবেদন করেন। চার প্রতিষ্ঠানের জন্যই বৃহৎ মান্থলি পেরোল দেখানো হয়। প্রকৃতপক্ষে ওই তিনটি রেস্টুরেন্টই অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যায় এবং ডক ওয়ারলেস এর কোনো কর্মী নেই৷ আর ডেভিড ও অ্যান্ড্রুর এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা কখনোই ছিল না। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস জানায়, আবেদন প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় একজন সচেতন নাগরিক ওই দুই ব্যক্তির জালিয়াতির প্রবণতা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে অবিহিত করে। দুইজনকেই এই অভিযোগে ২০২০ সালের মে মাসে আটক করা হয় এবং পরবর্তীতে স্টেভেলিকে হোম ডিটেনশনে পাঠানো হয়। এর এক সপ্তাহ পরেই স্টেভেলি ইলেক্ট্রনিক মনিটরিং ডিভাইস বন্ধ করে দেয়। এরপর পরিবার ও বন্ধুদের উদ্দেশ্যে একটি সুইসাইড নোট লিখে সাগরের পাড়ে গাড়ি পার্ক করে রেখে চলে যায়। তবে কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখে এবং ২০২০ সালের মে এবং জুলাই মাসে স্টেভেলিকে খুঁজে পেতে অভিযান পরিচালনা করে৷ তিন মাস ধরে স্টেভেলি ভুয়া ডকুমেন্ট, চুরির লাইসেন্স প্লেট এবং প্রায় পাঁচটি ভিন্ন ফোন নাম্বার ব্যবহার করে দেশজুড়ে পালিয়ে বেড়ায়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের জুলাই মাসের ২৩ তারিখ স্টেভেলিকে জর্জিয়ার আটলান্টা থেকে আটক করে ইউএস মার্শালস। এই ঘটনায় আদালত তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ দায়ের করে ও কারাদণ্ড প্রদান করে। বর্তমানে তাকে সাড়ে চার বছর জেলে কাটাতে হবে এবং তিন বছর সুপারভাইজড রিলিজে থাকতে হবে। স্টেভেলির অপর সহযোগী অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ তার শাস্তি পরবর্তী মাসে ঘোষণা করা হবে। এলএবাংলাটাইমস/ওএম