যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে, তবে এর হার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধ মাদক ও অভিবাসীদের প্রবাহ বন্ধে ব্যর্থতার অভিযোগে প্রতিবেশী এই দুই দেশের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে।
রবিবার ফক্স নিউজের সানডে মর্নিং ফিউচারস অনুষ্ঠানে লুটনিক বলেন, "মঙ্গলবার থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক কার্যকর হবে। তবে শুল্কের হার ও বিস্তারিত সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ও তার টিম নেবেন।"
এছাড়া, চীনের ওপরও ১০% নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে, যা দেশটির বিরুদ্ধে ফেন্টানিল পাচার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগের অংশ।
নতুন শুল্ক কার্যকর হলে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর মোট ২০% শুল্ক বসবে, কারণ এক মাস আগেই ১০% শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে।
এদিকে, চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেইজিং পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে, চীনের প্রতিক্রিয়া মূলত মার্কিন কৃষিপণ্য ও খাদ্যপণ্য লক্ষ্য করে হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, চীন এখনো পূর্ণমাত্রার বাণিজ্য যুদ্ধ এড়ানোর চেষ্টা করছে এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে চায়, তবে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তির ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
কানাডা বারবার বলছে, শুল্ক আরোপ উভয় দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। তবে তারা নিজেদের সুরক্ষা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
কানাডার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যমন্ত্রী অনিতা আনন্দ সম্প্রতি ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বলেন, "আমরা সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। তবে আমরা সবসময় আমাদের দেশের অর্থনীতি রক্ষা করব।"
গত মাসে কানাডা ৩০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্যের একটি তালিকা তৈরি করেছিল, যার মধ্যে পাস্তা, পোশাক ও সুগন্ধির মতো দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য রয়েছে, যা প্রতিশোধমূলক শুল্কের আওতায় আনা হতে পারে।
কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (CBSA) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল পাচার বন্ধে তাদের কার্যক্রম জোরদার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে উদ্ধার হওয়া মোট ফেন্টানিলের মাত্র ১% কানাডা থেকে আসে।
লন্ডনে ইউক্রেন সম্মেলন থেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ ফেন্টানিল প্রবাহের ক্ষেত্রে কানাডা কোনো সমস্যা নয়।"
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম রবিবার এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি কঠোর বার্তা দেন। কলিমা শহরে এক জনসভায় তিনি বলেন, "মেক্সিকোকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে। সহযোগিতা ও সমন্বয়—হ্যাঁ, কিন্তু অধীনতা—কখনই নয়।"
ট্রাম্প ১২ মার্চ থেকে সব স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণাও দিয়েছেন।
এছাড়া, তিনি নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য "পারস্পরিক" শুল্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপরও ২৫% শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম