আমেরিকা

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনায় বন্ধুত্বপূর্ণ অগ্রগতি: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে শুরু হওয়া আলোচনা “বন্ধুত্বপূর্ণ, তবে গঠনমূলক”পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তিনি এটিকে একটি “সম্পূর্ণ পুনর্গঠন”হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম Truth Social-এ বলেন, “আলোচনা অত্যন্ত ভালো হয়েছে। উভয় দেশের স্বার্থে চীনকে আরও বেশি মার্কিন ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।” ট্যারিফ যুদ্ধের প্রেক্ষাপট দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে চলা বাণিজ্য যুদ্ধেরপ্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর ১৪৫% পর্যন্ত শুল্কআরোপ করে এবং চীন পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যের উপর ১২৫% শুল্কবসায়। চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প চীনের উপর এই উচ্চ শুল্ক আরোপ করার পর, এই সপ্তাহান্তে জেনেভায় প্রথমবার দুই দেশের প্রতিনিধি দলমুখোমুখি হলো। আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন চীনের সহ-প্রধানমন্ত্রী হে লিফেংএবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট। চীনের প্রতিক্রিয়া ও মার্কিন অবস্থান চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বেইজিং এই আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিশ্বব্যাপী প্রত্যাশা, দেশের স্বার্থ এবং মার্কিন ব্যবসার দাবি বিবেচনায় নিয়ে। অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট শুক্রবার জানান, যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে শুল্ক কমাবে না, এবং চীনকেও কিছু স্বীকারোক্তি বা ছাড়দিতে হবে। বেসেন্ট আরও বলেন, এই আলোচনার মূল লক্ষ্য উত্তেজনা প্রশমন, কোনও বড় বাণিজ্য চুক্তি নয়। ট্যারিফের প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘লিবারেশন ডে’উপলক্ষে সব ধরনের আমদানির উপর সর্বজনীন বেসলাইন ট্যারিফচালু করা হয়েছে। এতে ৬০টি দেশের উপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একইসঙ্গে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, সব স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর ২৫% শুল্কএবং সব গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের উপরও অতিরিক্ত ২৫% ট্যারিফআরোপ করা হবে। এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি চুক্তি হয়, যেখানে বলা হয়েছে—বছরে সর্বোচ্চ ১ লাখ ব্রিটিশ গাড়ির উপর ট্যারিফ ২৫% থেকে কমিয়ে ১০% করা হবে। এটি গত বছরের ইউকে’র মোট গাড়ি রপ্তানির পরিমাণের সমান। শিল্প ও অর্থনীতিতে প্রভাব বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, মার্কিন ট্যারিফের কারণে চীনের অনেক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সমস্যায় পড়েছে। সোরবো টেকনোলজিনামের একটি কোম্পানি জানায়, তাদের পণ্যের অর্ধেকই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হতো, যা এখন গুদামে জমে আছে। অন্যদিকে, মার্কিন অর্থনীতি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ০.৩% হারে সঙ্কুচিত হয়েছে, কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান আগেভাগেই পণ্য আমদানি করে নিচ্ছে। চলমান আলোচনার বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা। এলএবাংলাটাইমস/ওএম