আমেরিকা

৪ বছরের শিশুর জীবন ঝুঁকিতে, মানবিক ভিসা বাতিল করে দেশত্যাগের নির্দেশ

যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসরত ৪ বছর বয়সী শিশুকন্যার পরিবার এখন ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। জন্মগত এক জটিল রোগে আক্রান্ত মেয়েটির চিকিৎসা বর্তমানে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই সম্ভব হলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে তাদের মানবিক ভিসা বাতিল করে পরিবারটিকে মেক্সিকো ফিরে যেতে বলা হয়েছে—যেখানে ওই চিকিৎসার কোনো সুযোগ নেই। সোফিয়া—এটি শিশুটির পরিচয় গোপন রাখতে ব্যবহৃত ছদ্মনাম—জন্মগ্রহণ করেছে অপরিণত অবস্থায় এবং সে ভুগছে শর্ট বাওয়েল সিনড্রোম-এ, একটি বিরল রোগ যার ফলে তার শরীর স্বাভাবিকভাবে পুষ্টি শোষণ করতে পারে না। বেঁচে থাকার জন্য সোফিয়ার প্রতিদিন ১৪ ঘণ্টা ইনট্রাভেনাসের উপর  নির্ভর করতে হয়। তার মা, ডেইসি ভারগাস, বলেন, “সে তার বয়স অনুযায়ী যতটা সম্ভব স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। এটা সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র এই দেশে পাওয়া চিকিৎসার জন্য।” ২০১৮ সালে সোফিয়ার পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় হিউম্যানিটেরিয়ান পারোল নামক একটি মানবিক কার্যক্রমের অধীনে। বর্তমানে তারা ক্যালিফোর্নিয়ার বেকারসফিল্ডে বসবাস করেন এবং প্রতি ছয় সপ্তাহে লস এঞ্জেলেসের শিশু হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। তবে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে হঠাৎ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার তাদের মানবিক ভিসা বাতিল করে দেয় এবং পরিবারটিকে ‘স্বেচ্ছায়’ দেশ ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে, সোফিয়ার বাবা-মায়ের কর্মসংস্থানের অনুমতিও বাতিল করা হয়েছে। পাবলিক কাউন্সিলের ইমিগ্রেশন রাইটস প্রজেক্ট-এর পরিচালনাকারী আইনজীবী জিনা আমাতো বলেন, “চিকিৎসকরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন—এই চিকিৎসা বন্ধ হলে সোফিয়া কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যাবে। এটা কোনো অনুমান নয়, এটা বাস্তবতা।” পরিবারটি এখন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে, যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে মেয়েটির চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে পারে। আইনজীবীদের সহায়তায় তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। “আমি কৃতজ্ঞ যে প্রথমে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল,” বলেন সোফিয়ার মা ডেইসি ভারগাস। “কিন্তু ওর এই শারীরিক অবস্থা কোনোভাবেই সাময়িক নয়। ওর চিকিৎসা থেমে গেলে সেটা মৃত্যুর শামিল।” এলএবাংলাটাইমস/এজেড