যুক্তরাষ্ট্র ইরানের কাছে একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ইরানকে একটি "বিস্তারিত এবং গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব" পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, "এই প্রস্তাব গ্রহণ করা ইরানের সর্বোত্তম স্বার্থে" ।
এই প্রস্তাবটি এমন সময়ে এসেছে যখন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, ইরান ৬০% মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০০ কেজির বেশি করেছে, যা অস্ত্র-মানের ৯০% মাত্রার কাছাকাছি। এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম আরও সমৃদ্ধ করলে প্রায় ১০টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব ।
প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে একটি আঞ্চলিক কনসোর্টিয়াম গঠন, যা বেসামরিক পারমাণবিক উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে এবং এটি IAEA ও যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণে থাকবে। এই পরিকল্পনাটি ওমানের প্রস্তাব অনুযায়ী গৃহীত হয়েছে ।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানান, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আল-বাসাইদি তেহরানে সংক্ষিপ্ত সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের কিছু উপাদান উপস্থাপন করেছেন। আরাকচি বলেন, "ইরান এই প্রস্তাবে তার জাতীয় স্বার্থ, অধিকার এবং নীতির আলোকে প্রতিক্রিয়া জানাবে" ।
তবে, ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার বজায় রাখতে চায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান তার সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করুক, যা চুক্তির একটি প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
এই প্রস্তাবটি রোমে অনুষ্ঠিত পঞ্চম দফা আলোচনার পর পাঠানো হয়েছে। যদিও আলোচনার তারিখ ও স্থান এখনও নির্ধারিত হয়নি, উভয় পক্ষই একটি মৌলিক চুক্তির কাঠামো স্থাপনে আগ্রহী।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, যাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বিঘ্নিত না হয় ।
IAEA-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইরান অতীতে গোপনে পারমাণবিক কার্যক্রম চালিয়েছে এবং এখনও কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়নি, যা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়িয়েছে ।
এই প্রস্তাবের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান একটি নতুন চুক্তির দিকে অগ্রসর হতে পারে, তবে উভয় পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম