যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলেতে ব্রিওন্না টেইলারের বাসায় পুলিশি অভিযানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন গুলিবর্ষণের দায়ে প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা ব্রেট হ্যাঙ্কিসনকে ৩৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন একটি ফেডারেল আদালত। আদালত জানায়, হ্যাঙ্কিসনের কর্মকাণ্ড নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল এবং তার গুলিবর্ষণ ছিল অপ্রয়োজনীয় ও বিপজ্জনক।
২০২০ সালের মার্চে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় পুলিশ একটি ‘নো-নক’ ওয়ারেন্ট নিয়ে ব্রিওন্না টেইলারের অ্যাপার্টমেন্টে হানা দেয়। হ্যাঙ্কিসন পাশের অ্যাপার্টমেন্টের কাচের জানালা ও দরজা লক্ষ্য করে ১০টি গুলি চালান, যদিও তার গুলিতে কেউ আহত হননি। এরপরও তার এই কাজকে আদালত 'মারাত্মক উদাসীনতা' বলে আখ্যা দেন।
বিচারক রেবেকা গ্র্যাডি জেনিংস বলেন, “কেউ যদি পুলিশের গুলিতে মারা না যান, তাও এমন বেপরোয়া আচরণে শাস্তি প্রাপ্য। ন্যায়বিচার শুধুমাত্র মৃত্যুর ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না।”
হ্যাঙ্কিসনের আইনজীবীরা দণ্ড হ্রাসের আবেদন করেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন, তার গুলিতে কেউ মারা যাননি এবং তিনি তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থল থেকে সহকর্মীদের সরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে বিচারক সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এই ঘটনায় প্রতিবেশীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছিল এবং তাদের অধিকারে হস্তক্ষেপ হয়েছে।
এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ব্রিওন্না টেইলারের মৃত্যু ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের অন্যতম প্রতীক হয়ে ওঠে এবং পুলিশের জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়।
এই রায় অনুযায়ী, হ্যাঙ্কিসন ৩৩ মাস কারাভোগের পাশাপাশি পরবর্তী তিন বছর পর্যবেক্ষণে থাকবেন। আদালত মনে করে, এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভবিষ্যতে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ রোধে ভূমিকা রাখবে।
বিচারক বলেন, “এই মামলার মাধ্যমে আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কেউ যদি দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে কাজ করে, তবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে—তা সে যত প্রভাবশালীই হোক না কেন।”
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম