আমেরিকা

সাবেক কংগ্রেসম্যান জর্জ স্যান্টোসের সাত বছরের জেল শুরু

জালিয়াতি, পরিচয় চুরি ও একাধিক ফেডারেল অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত সাবেক কংগ্রেসম্যান জর্জ স্যান্টোস অবশেষে সাত বছরের বেশি মেয়াদের কারাদণ্ড ভোগ করতে ফেডারেল কারাগারে হাজির হয়েছেন। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনস বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে যে ৩৭ বছর বয়সী স্যান্টোস বর্তমানে নিউ জার্সির ফেয়ারটন ফেডারেল সংশোধনাগারে আটক রয়েছেন। গত বছর নিউ ইয়র্কের আদালতে তিনি প্রতারণার অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছিলেন। এর মাধ্যমে শেষ হয়ে যায় নিউ ইয়র্কের এই নবাগত রাজনীতিকের উত্থান, যিনি ২০২২ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর হারিয়ে লং আইল্যান্ড ও কুইন্সের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত একটি আসন রিপাবলিকানদের দখলে আনেন। কিন্তু নির্বাচনের পরপরই The New York Times এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে, স্যান্টোস নিজের জীবনবৃত্তান্তে মিথ্যাচার করেছেন—যেমন, তিনি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি পাননি এবং কখনোই সিটিগ্রুপ বা গোল্ডম্যান স্যাক্সে কাজ করেননি, যদিও তিনি তা দাবি করেছিলেন। এরপর একের পর এক মিথ্যাচার প্রকাশ পেতে থাকে। তিনি মিথ্যা বলেছিলেন যে তাঁর মা ৯/১১ হামলা থেকে বেঁচে ফিরেছেন। এসব ঘটনার পর স্থানীয় ও ফেডারেল পর্যায়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। ফেডারেল প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেন, স্যান্টোস তাঁর নির্বাচনী তহবিল থেকে ব্যক্তিগত খরচের জন্য অর্থ আত্মসাৎ করেন, চাকরিতে থাকা অবস্থাতেও বেকার ভাতা দাবি করেন এবং Federal Election Commission (FEC)-এর কাছে মিথ্যা তথ্য দেন। তদন্তে জানা যায়, তিনি কিছু অনুদানদাতার অনুমতি ছাড়াই তাঁদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কয়েক মাসের ব্যবধানে তাঁর প্রচারাভিযানে ৪৪,০০০ ডলারেরও বেশি খরচ করেন। আদালতে দোষ স্বীকার করার পর তাঁকে কমপক্ষে ৩,৭৪,০০০ ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে সাজা ঘোষণার পর স্যান্টোস Cameo নামের একটি ভিডিও প্ল্যাটফর্মে নিজের ভক্তদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করেন, যেখানে সেলিব্রিটিরা ব্যক্তিগত ভিডিও বার্তা বিক্রি করে। কারাগারে যাওয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম X (পূর্বে টুইটার)-এ স্যান্টোস লেখেন, “আমার রাইনস্টোনগুলো গুছানো শেষ। হয়তো আমি মঞ্চ ছাড়ছি (এখনই), কিন্তু মনে রেখো—'লেজেন্ডরা' কখনো পুরোপুরি বিদায় নেন না।” ২০২৩ সালে তিনি ২৩টি ফেডারেল ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হন এবং বিগত দুই দশকে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হওয়া প্রথম সদস্য হিসেবে ইতিহাসে নাম লেখান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হওয়া মাত্র ষষ্ঠ ব্যক্তি।

এলএবাংলাটাইমস/ওএম