মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর হত্যাযজ্ঞ বন্ধ না হলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির প্রতি সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করে দেবে এবং প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপ নেবে।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “যদি নাইজেরিয়া সরকার খ্রিষ্টানদের হত্যার ঘটনা অব্যাহত রাখে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে সব সহায়তা বন্ধ করবে এবং প্রয়োজনে ‘গানস-অ্যা-ব্লেজিং’ অবস্থায় সেই কলঙ্কিত দেশে প্রবেশ করে এসব ইসলামি সন্ত্রাসীদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করবে, যারা এই ভয়াবহ নৃশংসতা চালাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ইতিমধ্যেই আমাদের প্রতিরক্ষা বিভাগকে সম্ভাব্য পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছি। সতর্কবার্তা দিচ্ছি—নাইজেরিয়া সরকার যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়!”
শুক্রবার ট্রাম্প নাইজেরিয়াকে “বিশেষ উদ্বেগের দেশ” হিসেবে ঘোষণা দেন—এটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি আইনগত পদবী, যা সাধারণত ধর্মীয় স্বাধীনতার গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য দায়ী দেশগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ট্রাম্প বলেন, “নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান ধর্ম এখন অস্তিত্বের হুমকির মুখে।”
তিনি জানান, এই বিষয়ে তদন্ত ও প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য তিনি রিপাবলিকান প্রতিনিধি রাইলি মুর (ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া), টম কোল (ওকলাহোমা) এবং হাউস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রায় ২৩ কোটি জনসংখ্যার নাইজেরিয়া ধর্মীয়ভাবে প্রায় সমানভাবে মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে বিভক্ত। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠী ও দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় সহিংসতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যা তারা “মানবিক সংকট” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
তবে সহিংসতার ধরন জটিল—শুধু খ্রিষ্টান নয়, অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়, এমনকি জাতিগত পরিচয় ও পেশাগত কারণে মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবু বলেন, “নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু হিসেবে উপস্থাপন করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। সরকার সব নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
টিনুবু আরও জানান, তার প্রশাসন খ্রিষ্টান ও মুসলিম উভয় ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে উন্মুক্তভাবে কাজ করছে এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিচ্ছে। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এদিকে, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, চলতি বছর নাইজেরিয়ায় ইসলামি জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যা দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম