যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের শীর্ষ আলোচকরা জানিয়েছেন, যুদ্ধের সমাপ্তি এখন রাশিয়ার আন্তরিকতার ওপর নির্ভর করছে এবং শান্তির জন্য তাদের বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। মস্কোতে এ সপ্তাহের শুরুতে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না এলেও, ফ্লোরিডায় মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব রুস্তেম উমেরভের মধ্যে দু’দিনের “গঠনমূলক আলোচনা” হয়েছে। আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারও উপস্থিত ছিলেন এবং শনিবার আরও একদফা আলোচনা হবে। তারা যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি প্রাথমিক কাঠামোতে সম্মত হয়েছেন এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি রক্ষায় প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়েও আলোচনা করেছেন।
ফ্লোরিডা বৈঠকে উইটকফের সাম্প্রতিক মস্কো সফর নিয়ে ইউক্রেনীয় দলকে ব্রিফ করা হয়, যেখানে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা করেছিলেন। ক্রেমলিন জানিয়েছে, মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে এখনও “কোনো সমঝোতা হয়নি”, যদিও পুতিন আরও বৈঠকে বসতে আগ্রহী। অন্যদিকে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার শান্তিচেষ্টার আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি জানতে চান মস্কো বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে এবং পুতিন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে নতুন কী অজুহাত দিচ্ছেন।
মার্কিন শান্তি পরিকল্পনার খসড়া প্রথমে গণমাধ্যমে ফাঁস হলে তা রাশিয়ার পক্ষে ঝুঁকে আছে বলে সমালোচনা হয়। পরবর্তীতে এতে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হলেও নতুন সংস্করণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি। যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড ইস্যু—এই দুই বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বড় মতপার্থক্য রয়ে গেছে। রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে ডনবাস অঞ্চলের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক রয়েছে। শুক্রবার পুতিন ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ডনবাস থেকে সরে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, না হলে রাশিয়া “জোরপূর্বক এলাকা মুক্ত করবে।” তিনি দাবি করেছেন যে রুশ বাহিনী ইতোমধ্যে পোকরোভস্কসহ কয়েকটি এলাকা দখল করেছে, যদিও ইউক্রেন এসব দাবি অস্বীকার করেছে।
ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের মতে, ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ দেওয়া বা শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রদান। রাশিয়া এর তীব্র বিরোধিতা করছে, আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার সুযোগ তিনি দিতে চান না। ক্রেমলিন জানিয়েছে, ন্যাটো সদস্যপদ ছিল মস্কো আলোচনার একটি “মূল বিষয়”। ট্রাম্প বলেছেন, আলোচনা “ভালো হয়েছে”, তবে এখন কিছু বলা খুব তাড়াতাড়ি—“কারণ ট্যাঙ্গো নাচতে হলে দু’জনই লাগে।”
এলএবাংলাটাইমস/ওএম