বাংলাদেশ

মন্ত্রীর বক্তব্য থামিয়ে দিলেন প্রতারিত ৪ হজযাত্রী

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো: আব্দুল্লাহ মঞ্চে বসে যখন এ বছরের হজযাত্রার সফলতার নানাদিক তুলে ধরছেন, ঠিক তখনি সামনের দর্শক সারি থেকে উঠে এসে তার বক্তব্য থামিয়ে দিলেন প্রতারণার শিকার ৪ হজযাত্রী। রোববার সকালে আশকোনার ঢাকা হজ অফিসে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের প্রায় শেষ দিকে মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, এ বছর হজ ব্যবস্থাপনায় কোনো অনিয়ম হয়নি। কোনো হজযাত্রী প্রতারিতও হয়নি। হজ অফিসের তিন তলার হল রুমে সাংবাদিক ছাড়াও সেখানে হজযাত্রী, কর্মকর্তা ও ওলামা মাশায়েখদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী সবার উদ্দেশে জানতে চান, প্রতারিত হয়ে হজে যেতে পারছেন না, এমন কেউ কি আছেন?
এসময় হল রুমের দক্ষিণ পূর্ব কর্ণার থেকে বয়োবৃদ্ধ চারজন হজযাত্রী এগিয়ে এসে মন্ত্রীর সামনে একেবারে মঞ্চের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাদের আইডি কার্ড ও ভিসার কপি দেখিয়ে বলেন, আমরা এজেন্সি দ্বারা প্রতারিত হয়েছি। আমরা প্রত্যেকেই সাড়ে তিন লাখ টাকা করে এজেন্সিকে দিয়েছি। আমাদের ভিসাও হয়েছে। এখন বিমান টিকিট আমাদের দেয়া হচ্ছে না। এসময় মন্ত্রী বলেন, ঠিক আছে, আমি যেহেতু আজ দুপুরের পরেই হজে চলে যাচ্ছি তাই হজ অফিসারকে বলে যাচ্ছি তিনি বিষয়টি দেখবেন।

আপনাদের কাগজপত্র সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনারা অবশ্যই হজে যেতে পারবেন।
পরে নয়া দিগন্তের সাথে আলাপকালে প্রতারিত ওই চার হজযাত্রী জানান, তারা প্রত্যেকেই পদ্মা ট্রাভেলস নামের (লাইসেন্স নং ১২৬৬) একটি এজেন্সিকে সব টাকা পরিশোধ করেছেন। ভিসাও তারা হাতে পেয়েছেন। একদিন আগে পর্যন্ত তাদের বিমান টিকিটও ওকে ছিল। কিন্তু আজ অনলাইনে তাদের বিমান টিকিট ব্লক দেখানো হচ্ছে। আর এজেন্সির লোকজনও তাদের কাছে আরো অতিরিক্ত টাকা দাবি করছেন। অন্যথায় তাদের হজে নেয়া হবে না বলেও হুমকি দিচ্ছেন আবু হাসান নামের ঐ এজেন্সিরই একজন গ্রু লিডার।

প্রতারিক এই চার হজযাত্রীর নাম ইদ্রিস আলী, নুরুল ইসলাম, জাহানারা বেগম ও আবদুস সবুর খান। তাদের প্রত্যেকেরই বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানায়। আবদুস সবুর খান জানান, তিনি হজের জন্য মোট তিন লাখ ৬০ টাকা দিয়েছেন। আর ইদ্রিস আলী দিয়েছেন তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা। নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম দিয়েছেন দু'জনে প্রায় ৬ লাখ টাকা। ফসলী জমির ২১ কাঠা বিক্রি করে সস্ত্রীক হজ করার জন্য টাকা জমা দিয়েছেন বলে জানান এই হজযাত্রী।

এদিকে প্রতারিক এই হজযাত্রীদের বিষয়ে ঢাকা হজ অফিসের পরিজচালক মো: সাইফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, কোনো হজযাত্রীই হজে যাওয়ার বাদ পড়বে না। আমরা তাদের কাগজপত্রগুলো দেখবো। সব ঠিক থাকলে অবশ্যই তারা হজে যেতে পারবেন। আমরা এজেন্সি মালিককে ডেকে অবশ্যই এর কৈফিয়ত চাইব। প্রয়োজনে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও দ্বিধাবোধ করবো না।