বাংলাদেশ

শহীদ মিনার ভেঙে এমপির পিতার সেই ম্যুরাল তৈরির কাজ বন্ধ

পাবনার সুজানগরের সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে স্থানীয় এমপি আহমেদ ফিরোজ কবীরের পিতার সেই ম্যুরাল তৈরির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

'শহীদ মিনার ভেঙে এমপির পিতার ম্যুরাল' মঙ্গলবার কয়েকটি গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশ হলে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ম্যুরালটি তৈরির কাজ বন্ধ রাখা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহম্মদ আব্দুল বাছেত বাচ্চু বলেন, শহীদ মিনারটি বাজার সংলগ্ন রাস্তার পাশে হওয়ায় অনেকেই এর গা ঘেঁষে মলমুত্র ত্যাগ ও আবর্জনা ফেলায় শহীদ মিনারটির প্রবিত্রতা নষ্ট হচ্ছিল। এ কারণে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন শহীদ মিনারটি অন্যত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। পরে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অনুমোদন নিয়ে এটি ভাঙা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা
'ময়লা ও মলমূত্র ত্যাগের জায়গায় কেন মরহুম আহমেদ তফিজ উদ্দিনের মতো আদর্শবান লোকের ম্যুরাল তৈরি করছেন'- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি অধ্যক্ষ। এছাড়া ব্যক্তি বিশেষের ম্যুরাল কলেজ ক্যাম্পাসে কেন বা তারা জায়গাটি কিনে নিয়ে এটি তৈরি করছেন কি-না, তারও জবাব দিতে পারেননি তিনি। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের মুখে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য সামছুল হক, আহম্মদ তফিজ উদ্দিনের পুত্র আহম্মেদ ফারুক কবীর বাবু, অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব, কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

শহীদ মিনার ভেঙে ম্যুরাল তৈরির নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ইউএনও সুজিৎ দেবনাথ বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি সবই জানেন। আর এমপি যা বলবেন, আমাকে তাই করতে হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।

তৎকালীন জেলা প্রশাসক (বর্তমান নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক) জসিম উদ্দিন মোবাইল ফোনে বলেন, পাবনায় কর্মরত অবস্থায় আমার সঙ্গে ওই কলেজের কারও এই বিষয়ে কোনো কথাই হয়নি। তারা এমনটি বলে থাকলে মিথ্যা বলেছেন।

জেলা প্রশাসক কবীর হোসেন বলেন, 'কলেজ কর্তৃপক্ষের দূরদর্শীতার অভাবেই এমনটি হয়েছে। তারা আরও সতর্ক হয়ে কাজটি করতে পারত। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন- শহীদ মিনার থাকলে জায়গাটি খারাপ, আর ম্যুরাল তৈরি করলে ভালো হয়ে যাবে?'

তিনি বলেন, 'ইতিমধ্যেই ম্যুরাল তৈরির কাজ বন্ধ রেখে শহীদ মিনারটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছি।'