বাংলাদেশ

হতাশাগ্রস্ত মা খুন করলো শিশু পুত্রকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুর উপজেলায় হতাশ হয়ে এক মা তার দুই বছরের ছেলেকে হত‌্যা করেছেন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

গত বুধবার সকালে উপজেলার রূপসদী ইউনিয়নের মধ্যপাড়ার বিল থেকে শিশু রাফির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে ভেলানগর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. ফারুক মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া রাফির মা সানোয়ারা বেগম সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, প্রায় ১০ বছর আগে ভেলানগর গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার সঙ্গে পাশের গ্রামের সাগর মিয়ার মেয়ে সানোয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন পর ফারুক মিয়া ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে চাকরি নিয়ে ঢাকায় চলে যান। পরে জীবনযাত্রার মনোন্নয়নের জন্য ম্যাচ ফ্যাক্টরির চাকরি ছেড়ে সৌদি আরব চলে যান। শ্বশুরবাড়িতে জায়গা সংকটের কারণে সানোয়ারা বেগম বাবার বাড়ি এসে তার বড় চাচার ঘরে বসবাস শুরু করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ফারুক মিয়া সৌদি আরব যাওয়ার সময় স্বজনদের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই টাকা শোধ দিতে না পারায় দুই শিশু সন্তান নিয়ে ‘হতাশাগ্রস্ত’ হয়ে পড়েন সানোয়ারা বেগম। এছাড়া রাফি একটি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল। শরীরের কোথাও সামান্য কেটে গেলে ক্ষতস্থান থেকে রক্তপড়া বন্ধের জন্য হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো লাগতো। স্বামী প্রবাসে যাওয়ার প্রায় তিন বছর হতে চললেও রাফির বিরল রোগের চিকিৎসা ও সাংসারিক খরচের যোগান দেয়ার পর ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ‘হতাশাগ্রস্ত’ হয়ে পড়েন  সানোয়ারা।

এসব কারণে ভোরে রাফিকে প্রশ্রাব করার জন্য ঘরের বাইরে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। এরপর বাড়ির পাশে বিলের কচুরিপনার ওপর রাফির লাশ ফেলে দেন।

হত্যার ঘটনায় রাফির দাদা আশরাফ জালালী ওইদিন বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ‘সন্দেহজনক আচরণ’ দেখে সানোয়ারাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেন।